Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আরাভের সঙ্গে পুলিশের সাবেক কর্মকর্তার সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ মার্চ ২০২৩ ১৬:৫২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুবাইয়ে বসবাসরত রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন সাবেক কোনো কর্মকর্তার সম্পর্ক আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে পালিয়ে গিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বনে যাওয়া পুলিশ হত্যার আসামি আরাভকে ফেরাতে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী থানার এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের আইজিপি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আরাভ খানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা তার (আরাভ খান) বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। ইন্টারপোলসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জায়গায় আমরা যোগাযোগ করেছি। পুলিশের এক সদস্য হত্যা মামলায় তার বিরুদ্ধে যে নামে আমরা অভিযোগপত্র দিয়েছি, সেই নামে রেড নোটিশ জারি করে সেটা ইন্টারপোলে পাঠানো হয়েছে। এইমাত্র খবর পেলাম, ইন্টারপোল সেটি গ্রহণ করেছে। এতটুকু বলতে পারি যে, আমরা কাজ করছি। কীভাবে কাজ করছি কিংবা কী করছি সেটি আপাতত বলতে চাই না।’

আরাভ খানের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন সাবেক এক কর্মকর্তার সম্পর্কের গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সেটি আমাদের নলেজে এসেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। উপযুক্ত সময়ে আমরা সেটি আপনাদের জানাব।’

আরাভ খানের সঙ্গে তারকাদের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে তারকাদের কী সম্পর্ক, তারা কী কারণে তার কাছে গেছে সেটি জানার চেষ্টা করছি। তারা সবাই দেশে ফিরুক, তখন আপনারাও তাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন। তবে তারকারা তার কাছে গেছেন, এখন অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের কিছু বিষয় থাকে, সেখানে তারকারা যান। তার মানে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক কিংবা তারাও জড়িত এমনটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি।’

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘সেখানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা সবাই মিলে সেখানে দায়িত্বপালন করছি। পুলিশ, জেলা পুলিশ, এপিবিএন, র‍্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, প্রশাসন, ট্রিপল আর সি- সকলে মিলে কাজ করছি। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কাজ যারা করছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রতিটি ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এমন নয় যে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।‘

কক্সবাজারে অপহরণ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যত ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধার করেছি। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো বিষয় নেই।’

আরাভ খান বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আশুতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মতিউর রহমান মোল্লা। যদিও আরাভ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেই গত কয়েক বছর ধরে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তার ভারতীয় পাসপোর্ট নম্বর ইউ ৪৯৮৫৩৮৯। ওই পাসপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের নরেন্দ্রপুরের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে।

তার স্ত্রী ভারতীয় নাগরিক (আসাম) সাজেমা নাসরিনের পাসপোর্টটিও ভারতীয়। আরাভের কথিত বাবা-মা জাকির খান ও রেহানা বিবি খানের পাসপোর্টেও উভয়ের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে কন্দর্পপুর, উদয় সংঘ ক্লাব, রাজপুর-সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা-৭০০০৮৪।

গত ১৬ মার্চ আরব আমিরাতের দুবাই সিটিতে আরাভ খানের সোনার দোকান উদ্বোধন করেন বাংলাদেশি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে আলোচিত হিরো আলমও। মূলত আরাভ খানের নিমন্ত্রণেই সাকিব আল হাসান ও হিরো আলম বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে যান।

সেই ঘটনার পর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আরাভ খানকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, এই আরাভ খানই ২০১৮ সালে বনানী পুলিশের এসবি শাখার পরিদর্শক মামুনের হত্যাকারী।

আরও পড়ুন
‘আরাভ খানকে দেশে আনতে সবরকম চেষ্টা চলছে’
আরাভ খানকে কি আদৌ দেশে আনা সম্ভব?
‘প্রয়োজনে সাকিব ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’

 

 

সারাবাংলা/আরডি/একে

আইজিপি আরাভ খান স্বর্ণ ব্যবসায়ী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর