সেই বিচারককে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন
২৩ মার্চ ২০২৩ ২৩:১০
ঢাকা: স্কুলপড়ুয়া মেয়ের সহপাঠীর মাকে প্রকাশ্যে মাফ চাইতে বাধ্য করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৩ হতে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (প্রশাসন-১) মোহাম্মদ ওসমান হায়দারের সই করা প্রজ্ঞাপনের ভাষ্য অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা জজ বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে বদলি করে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাকে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনকে জেলা ও দায়রা জজ কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তার কাছে আগামী ২৮ মার্চ বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। এর আগে, এ বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেয় আইন মন্ত্রণালয়।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী সব শিক্ষার্থীর পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বিচারকের মেয়ে কখনোই শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।
এরই জের ধরে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর মাকে বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন তার পায়ে ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেন— এমন অভিযোগে গতকাল (২২ মার্চ) স্কুলের সামনের রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এর আগে গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেলে স্কুলের সামনের রাস্তা বন্ধ করে কয়েক দফা প্রতিবাদ জানায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
তারও আগে গত ২০ মার্চ রাতে স্কুলের ফেসবুকে সহপাঠীদের কটাক্ষ করে একটি পোস্ট লেখে ওই বিচারকের মেয়ে। এতে কয়েকজন সহপাঠী ক্ষুব্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ জানায়। পরদিন ২১ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে স্কুলের অভিভাবক সমাবেশে এসে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন তিন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবককে শিক্ষকের মাধ্যমে ডেকে আনেন। ফেসবুকে তাকে ও তার মেয়েকে নিয়ে ‘অপমানজনক কথা’ বলা হয়েছে এমন অভিযোগে সাইবার অপরাধে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন বিচারক। এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীর মাকে বিচারকের পা ধরে প্রকাশ্যে মাফ চাইতে বাধ্য করেন।
সে সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন সেই বিচারকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসিয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম