স্বাস্থ্য অধিদফতরের যেসব সমস্যার কথা জানালেন ডিজি
৩০ মার্চ ২০২৩ ১১:৫৩
ঢাকা: প্রথম মেয়াদে ২ বছর সময় কাটানোর পরে আবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। চলতি মেয়াদসহ প্রায় আড়াই বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে নানা সফলতার পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন কিছু সমস্যার বিষয়েও। এর মাঝে অন্যতম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় অনভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের অভাব।
এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল্যাবরেটরি মেডিসিন (নিলমার) ও রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) শক্তিশালী করার কথাও জানান। একইসঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসেও নানা সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
গতকাল বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর হোটেল রেঁনেসায় আয়োজিত ৫ম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) খসড়া স্ট্রাটেজিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
অধ্যাপক ডা. খুরশিদ আলম বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরে আমার দুই বছর আট মাসের মতো কাজের অভিজ্ঞতা। আমাদের প্রতিবছর অসংখ্য পরিকল্পনা থাকে, কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কাজ করতে না পারার কারণগুলোর মধ্যে প্রথম হলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় অনভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের অভাব।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরে আরেকটি প্রতিবন্ধকতা হলো যেকোনো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে গেলে কাজে দায়মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু এটা আমরা ঠিকমতো পাচ্ছি না। এর আরেকটি কারণ হলো বিভাগগুলোতে এমন লোকজন পদায়িত হচ্ছেন, যারা তাদের চাকরির শেষ সময়ে। তারা ওই সময়ে ঝুঁকি নিয়ে বড় কোনো কাজও করতে চান না। শেষ সময়টা তারা পায়ে পা তুলেই কাটিয়ে দেন। এজন্য আমি মনে করি, কোনো দায়িত্বে পদায়নের ক্ষেত্রে অন্তত তিন বছর সময় নিয়ে দেওয়া উচিত।’
‘আমাদের লাইন ডিরেক্টর আর ডিরেক্টর পদ নিয়ে কিছু বিরোধ আছে, যে কারণে অনেক কাজও আটকে আছে। আমাদের রেফারেল সিস্টেম এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। এমনকি আমাদের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসেও নানা সমস্যা আছে। আমাদের উচিত উবার ও পাঠাওয়ের মতো অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা’, বলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য মেডিকেল ওয়েস্ট মেনেজম্যান্ট (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) একটি বড় ঝুঁকির বিষয়, এটিকেও এইচপিএনএসপি প্ল্যানে যুক্ত করতে হবে। জন্মগত বধির শিশুকে দুই বছরের মধ্যে শনাক্ত করতে পারলে তাদের সুস্থ করে তোলা যায়। এইচপিএনএসপি প্ল্যানে ওরাল হেলথকেও আনা দরকার।’
গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ডা. খুরশিদ আলম বলেন, ‘গবেষণায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। গবেষণা বাড়াতে হলে আইইডিসিআরকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারকে (নিলমার) আমরা শক্তিশালী করতে পারিনি। এটিকেও আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে নানা ধরনের সমস্যা ও অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়, এর কারণ হলো আমাদের প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংয়ের অভাবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
সারাবাংলা/এসবি/এমও