গ্যাস-বিদ্যুতের বিল না দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ

ঢাকা: গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সরকারি কিংবা বেসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তথ্যটি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের (এফইআরবি) প্রকাশনা ‘এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

বিদ্যুতের দাম প্রসঙ্গে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানি খাতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বেশি না পড়লে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এবার সহনীয় থাকবে।

জ্বালানির দামের ওপর বিদ্যুতের দাম নির্ভর করে জানিয়ে তিনি বলেন, এ দাম অনেকটাই নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের স্থিতিশীলতার ওপর। আন্তর্জাতিক বাজারে যতক্ষণ পর্যন্ত স্থিতিশীলতা না আসে, ততক্ষণ বিদ্যুতের দামের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর যাতে অভিঘাত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। বাজেটেও ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে।

জ্বালানি তেলের দামের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যদি জ্বালানি তেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমতির দিকে থাকে, তাহলে দেশের বাজারেও সমন্বয় হবে।

ডলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক সময় ডলারের বাজার কিছু্টা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন ডলার সংকট কাটিয়ে উঠছে।

গভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধান প্রসঙ্গে বলেন, কনকো ফিলিপস চলে গেলো দামের ইস্যু তুলে। আমরা পসকো দাইয়ু ডেকে এনেছি। এখন এক্সন মবিল আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমার মনে হয় ওরা কৌশলগত কারণে আসতে চায়। এ বছরের মধ্যে কিছু একটা হতে পারে।

এখনই কয়লা উত্তোলনের কোন পরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে বলেন, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে হবে, কয়লা বসে আছে পানির উপরে। যে পানির স্তর বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। আরেকটি বিষয় রয়েছে উর্বর মাটি, এসব বিবেচনা করে দেখলাম। কয়লার সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে, কয়লা এবং তেলের চেয়ে উর্বর জমি খুবই জরুরি। যে কারণে এখনই কয়লা উত্তোলনের চিন্তা করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমরা অনেক ভাল আছি বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর এই বিদ্যুৎ, জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা।

সাউথ আফ্রিকা, বিটেনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে, এমন উদাহরণ টেনে এ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্জন নিয়ে গর্ববোধ করি। পাকিস্তান ডেথট কান্ট্রি, শেম কান্ট্রি । সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল অর্ধেক। ৫২ বছর পরে আজকে পাকিস্তানের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে তারা (পাকিস্তান) ৫ বছর পিছিয়ে। আমি খয়ের খা হিসেবে নয়, তাত্ত্বিকভাবে এটা প্রমাণ করে দিতে পারি। বাংলাদেশের আর্থিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল’র মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন বলেন, শীতে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কমে যায়। তখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টি চ্যালেঞ্জের। যা আমাদের পরমাণু বিদ্যুতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ((ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এফইআরবির নির্বাহী পরিচালক রিশান নাসরুল্লাহ।

প্রকাশনায় বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ, ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম, সিনিয়র সাংবাদিক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনসহ অনেকের লেখা স্থান পেয়েছে।

সারাবাংলা/ জেআর/এনইউ

টপ নিউজ