হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন গবেষকদের
১ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৪৮
নোবিপ্রবি: সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) গবেষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে কাঁকড়ার চাষ আরও লাভজনক হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মৎস্য অধিদফতরের সাসটেইনেবল কোস্টাল মেরিন প্রকল্পের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করেছে নোবিপ্রবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ। এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়, গ্লোব এগ্রো লিমিটেড এবং ইরাওয়াব ট্রেডিং।
বর্তমানে বাংলাদেশের খুলনা এবং কক্সবাজারে শীলা কাঁকড়া চাষ করা হয়। বৈদেশিক চাহিদা বেশি হওয়ায় কাঁকড়া রফতানির মাধ্যমে প্রতিবছর ৩০-৪০ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় যোগ হচ্ছে। কিন্তু কাঁকড়ার চাষের জন্য চাষিরা প্রকৃতির ওপর সম্পূর্ণ রূপে নির্ভরশীল। তারা বিভিন্ন উপকূলীয় মোহনা এলাকা ও ম্যানগ্রোভ এলাকা থেকে কিশোর কাঁকড়া আহরণ করে তা মোটাতাজাকরণ করে থাকেন।
এছাড়াও নরম খোলসের কাঁকড়ার চাষ ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনিয়ন্ত্রিত আহরণ চলছে, যা জীববৈচিত্র্যর জন্য হুমকি। কাঁকড়ার আহরণ দিন দিন বেড়ে চলায় কাঁকড়ার প্রাপ্যতা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং অন্যান্য জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন।
অন্যদিকে, কাঁকড়ার মোটাতাজাকরণে চাষিরা বিভিন্ন ধরনের মাছ কাঁকড়ার খাবার হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন, যা সম্পূরক ও নিয়ন্ত্রিত না। এসব সমস্যার সমাধানে সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে উৎপাদিত কাঁকড়ার পোনা নার্সিং ও মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি কক্সবাজার এবং সাতক্ষীরা জেলায় চলমান রয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন করা হয়। প্রথম পর্যায়ে উৎপাদিত প্রায় ২০০০০ পোনা কক্সবাজারের ১৩ জন কাঁকড়া চাষিকে সরবরাহ করা হয়। এই পোনা নার্সিং ও চাষাবাদে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্ক উদ্ভাবিত সম্পূরক খাদ্যও চাষিদের সরবরাহ করা হয়।
গত ১৮ মার্চ টেকনাফের মিনাবাজারে চাষি পর্যায়ে সরবরাহকৃত কাঁকড়ার প্রথম আহরণ এবং মাঠ দিবস কর্মসূচি পালিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান।
মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক প্রকল্পের অগ্রতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কাঁকড়া ব্লু ইকোনোমিতে, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ তিনি গবেষকদের চাষিবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধান গবেষক নোবিপ্রবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মামুন বলেন, ‘হ্যাচারির পোনা ও সম্পূরক খাবার দিয়ে কাঁকড়া উৎপাদন বাংলাদেশের উপকূলীয় মৎস্যচাষে মাইলফলক হয়ে থাকবে।’ তিনি উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তি সম্প্রসারণে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
সারাবাংলা/এমও
কাঁকড়া চাষ নোবিপ্রবি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) হ্যাচারি