Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আটকে ৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থী নির্যাতন

যবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট
৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৩২

যশোর: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ইসমাইল হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীকে হল কক্ষে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে।

রোববার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের একটি কক্ষ থেকে সহপাঠীরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ইসমাইল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং ময়মনসিংহের বলরামপুর গ্রামের আব্দুল মানান্নের ছেলে।

অভিযুক্তরা হলেন-কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সালমান এম রহমান ও একই বিভাগের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী সোহেব আলী। তারা হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ইসমাইল যশোর শহরের পালবাড়ি ভাস্কর্য মোড়ে একটি ছাত্রবাসে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে ইসমাইলের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন সোহেব আলী ও সালমান এম রহমান। ইসমাইল দিতে অস্বীকার করলে রোববার দুপুরে ডিপার্টমেন্টে ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই দুই জন তাকে ডেকে হলে নিয়ে যায়। এর দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ইসমাইলকে বেঁধে রেখে রড, পাইপ আর বেল্ট দিয়ে মারধর করে। পরে সন্ধ্যায় সহপাঠীরা উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শিক্ষার্থী আল জুবায়ের রনি জানান, ইসমাইল কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। রোববার দুপুরের পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এমনকি তার ফোনও বন্ধ ছিলো। তিনি রোজা ছিলেন। ইফতারের সময় না পাওয়ায় অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তার সহপাঠীরা জানান, হলের সালমান আর সোহেব ক্লাস চলাকালীন সময়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো, তারপর আর খোঁজ নেই ইসমাইলের। এসময় সহপাঠীরা হলে গিয়ে খুঁজে দেখেন ৫২৮ নম্বর কক্ষে অসচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি। প্রথমে ক্যাম্পাসে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়াতে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, ৫২৮ নম্বর কক্ষটি ছয়জনের থাকার ব্যবস্থা থাকলেও ছাত্রলীগকর্মী সোহেব আর সালমান দুইজনই থাকেন। গাঁজা সেবন ও ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করার দায়ে সোহেব বহিষ্কার হওয়ার পরেও ছাত্রলীগের প্রভাবে হলে নিয়মিত বাসিন্দা তিনি।

এর আগেও এই দুইজনের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রদের শিবির উপাধি দিয়ে চাঁদা দাবি করারও অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা দুইজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী।

ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ব্যক্তির দায় কখনো সংগঠন নেবে না। চাঁদাবাজদের ছাত্রলীগ কখনও প্রশ্রয় দেয় না। আর ওরা ছাত্রলীগের কোন পদধারী কেউ নয়।

শহীদ মশিয়ুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড.মো.আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ভর্তি করার আগে তার মুখ দিয়ে নির্যাতনের বর্ণনা শুনেছি। ইসমাইলের ভাষ্য চাঁদার দাবিতে তাকে আটকে রেখে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্যাতন চালানো হয়েছে।

আমরা নির্যাতনের কক্ষটি সিলগালা করে দিয়েছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থী সালমান এম রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আর এর আগেই বিশৃঙ্খলা ও গাঁজা সেবনের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছিলো সোহেব আলীকে।

বহিষ্কার হওয়ার পরেও কিভাবে হল ছিলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সোহেব মাঝে মধ্যে থাকতো। তারা ছাত্রলীগ করে কিনা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কক্ষটি তালাবদ্ধ করে দিয়েছি। বিশৃঙ্খলাকারীদের যবিপ্রবিতে স্থান নেই। এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আমরা হাসপাতালে খোঁজ খবর নিয়েছি। এই ঘটনায় আরোও কারা জড়িত তদন্ত কমিটির মাধ্যমে উঠে আসবে। একই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার গভীর রাতে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন আহত ইসমাইলকে দেখতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যান।

সারাবাংলা/এনইউ

টপ নিউজ নির্যাতন যবিপ্রবি শিক্ষার্থী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর