Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাবেক চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ৮

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:১১

সিরাজগঞ্জ: জেলার তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস সরকার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত এসএমজি রাইফেলসহ ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১১ রাউন্ড তাজা গুলি, ২টি চাকু ও ১টি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলো ২০০২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বেলকুচির রান্ধুনীবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প থেকে লুণ্ঠন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন ও সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল। এর আগে, শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দোগাড়ীয়া ঈদগাহ মাঠ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পাবনার চাটমোহর উপজেলার বাঙ্গালা গ্রামের মৃত আমার সরকারের ছেলে মো. জহুরুল ইসলাম তুমার (২৫), দিনাজপুরের সুজাপুর বানিয়াপাড়া গ্রামের বিকাশ মহন্তর ছেলে বিশ্বনাথ মহন্ত (২৩), সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সুজা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত গফুর মোল্লার ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৪০), রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত গকুল চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী বলরাম চন্দ্র দাস (৩৮), তাড়াশের গুড়পিপুল গ্রামের মৃত শংকর চন্দ্র দাসের ছেলে উত্তম চন্দ্ৰ দাস (৪০), তাড়াশের টাগরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের গ্রামের মৃত জুরান উদ্দিনের ছেলে মো. রহমত আলী (৪৮), পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটাখালি পূর্বপাড়া গ্রামের গ্রামের আলহাজ মো. আমীর সরকারের ছেলে মো. রহমত আলী (৪৫), ও তাড়াশের দেওঘর গ্রামের মৃত গণেশ উরাও এর ছেলে শ্রী সুনীল উরাও (৪৫)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০০২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রান্ধুনীবাড়ি পুলিশ ক্যাম্প থেকে লুণ্ঠন করা একটি এসএমজি বন্দুক, একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, একটি থ্রি নট থ্রি কাটা রাইফেল, ১১ রাউন্ড থ্রি নট থ্রি তাজা গুলিসহ ১১টি গুলির খোসা, দুটি চাকু, একটি সাউন্ড গ্রেনেড ও একটি ভ্যান উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি আব্দুল বাতেন বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তাড়াশ থানার অন্তর্গত ভোগলমান বাজারে সন্ধ্যায় শত শত লোক সমাগমের মধ্যে মুখোশধারী আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ১৪-১৫ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী গুলি করে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আ. কুদ্দুস সরকারকে হত্যা করে। হত্যাকারীরা হত্যা সংঘটনের পর বাজারে পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির লিফলেট এবং সর্বহারা পার্টি জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি তাড়াশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়।’

হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে হত্যা করে এই পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সদস্যরা। সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন এই সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দুস। তারা মনে করেছেন এই সাবেক চেয়ারম্যান তাদের পথের কাটা, তাই তাকে হত্যা করা দরকার। এই চিন্তা থেকেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে তাড়াশের দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দোগাড়ীয়া ঈদগাহ মাঠ এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ একটি সন্ত্রাসী দল মহড়া দিচ্ছে বলে খবর আসে। এর পরই আমাদের একটি টিম অভিযান চালিয়ে সাত জনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা সুনীল উরাওকে তাড়াশ থানার তালম ইউনিয়নের দেওঘর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কুদ্দুস হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাই পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির সক্রিয় সদস্য। হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে মোট ১৪-১৫ জন অংশ নেয়। হত্যার ব্যবহৃত আগ্নেয়াসসহ মোট তিনটি। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো হত্যা মিশনে ব্যবহৃত হয়।’

নিহত আব্দুল কুদ্দুস সরকার দীর্ঘ নয় বছর দেশীগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি পাঁচ বছর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

সারাবাংলা/পিটিএম

আসামি কুদ্দুস চেয়ারম্যান গুলি হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর