ঐশিকা-ইমরুল ‘জুলুমবাজ’, ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার দাবি
১৫ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৩৮
ফরিদপুর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ (বিএসএমএমসি) ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশারফ ওরফে ঐশিকা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান ওরফে জিমকে ‘জুলুমবাজ’ আখ্যায়িত করে তাদের নানা ধরণের দুর্নীতির বিচারের পাশাপাশি সংগঠন থেকে তাদের বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মাইনুল এহছান মাহির (সাময়িক বহিষ্কৃত) ও কলেজের চতুর্থ বর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানিয়েছেন।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহেলের সভাপতিত্বে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐশিকার নানা ধরনের দুর্নীতি ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল এহছান মাহিরকে অবৈধভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের মরহুম অ্যাডভোকেট শামসুদ্দীন মোল্লা মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাইনুল এহসান।
তিনি বলেন, “গত ১৩ এপ্রিল ‘ইভটিজিং’–এর কথিত অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
এ অভিযোগ ‘সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে মাইনুল এহসান জানান, রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়া সভাপতি ও সম্পাদক সাময়িকভাবে বহিষ্কারের যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, তা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠণতন্ত্র পরিপন্থী।’
মাইনুল এহসান বলেন, ‘সভাপতির বিভিন্ন অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় তিনি রোষানলে পড়েন এবং এজন্য নানাভাবে তাকে ও তার সহযোগীদের হয়রানি করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাকে ও আমার বান্ধবীকে গালাগালি করেছিল সভাপতি সম্পাদকের অনুসারীরা। আমি অধ্যক্ষের কাছে তার বিচার চাওয়ায় অধ্যক্ষ আমাকে কিশোরগঞ্জ মেডিকেলে মাইগ্রেন দিয়ে আমার প্রতি অন্যায় আচরণ করেছেন। এর পিছনে কলকাঠি নাড়িয়েছে মাশতুরা ও তার অনুসারীরা।’
তাদের পিছনে ‘প্রভাবশালী মহলের ইন্ধন রয়েছে’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ বলে বলীয়ান হয়ে তারা ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছেন। তিনি অভিযোগ করেন মাশতুরা সাথে তার মতের মিল না হওয়ায় কলেজ ছাত্রাবাসে তার ওপর দুই দফা প্রাণঘাতি হামলা হয়েছে। এ তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য তার মোবাইল ফোন ছিনতাই করা হয়েছে।’ এজন্য থানায় জিডি করেও আইনের কোনো সহায়তা পাননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ঐশিকার নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানানো হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশারফ ওরফে ঐশিকা বলেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল এহসান প্রথম বর্ষের ৫ ছাত্রীকে অশ্লীল কথা বলেন। ওই শিক্ষার্থী এ ব্যাপারে আমাকে জানায়। পরে ওই শিক্ষার্থী অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে জানায়। সমগ্র ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড করা রয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘সাময়িক বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শাতে হবে— ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে এ জাতীয় কোনো কথা বলা নেই। ছাত্রলীগের পদ নিয়ে একজন শিক্ষার্থী ইভটিজিং করবে তা মেনে নেওয়া যায় না বিধায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/এসবি/এমও