গরমের দাপট চলছেই, কখন নামবে স্বস্তির বৃষ্টি?
১৮ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বৈশাখের তপ্ত দুপুর। রোদের এমন ঝাঁঝ নিকট অতীতে দেখেনি চট্টগ্রামের মানুষ। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। রোদের চোখ রাঙানি আর তীব্র গরম নিয়েই চলছে নগরজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবনের ঠেলা বইতে হচ্ছে কাঠফাটা রোদকে সঙ্গী করেই!
সুখবর নেই আবহওয়া অফিসের কর্তাদের কাছেও। আগামী ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের কোনো আশা নেই, কমবে না তাপমাত্রা- মিলেছে এমন পূর্বাভাসই। নিকটতম সময়ের মধ্যে তুমুল বৃষ্টি এসে নগরজীবনে দু’দণ্ড স্বস্তির পরশ ছড়াবে- এমন আশার কথাও শোনাতে পারছে না আবহাওয়া অফিস।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাদ তঞ্চঙ্গ্যা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বিভাগে আগামী ২৪ ঘন্টা শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ২৪ ঘন্টার মধ্যে নেই। দিনে ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। কক্সবাজার ও খাগড়াছড়িতে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
তবে ২১ এপ্রিল অর্থাৎ সামনের শুক্রবার থেকে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। কালবৈশাখি ও সামান্য শিলাবৃষ্টির মতো হতে পারে। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও স্থায়ীত্ব বেশি হবে না বলে জানিয়েছেন মেঘনাদ তঞ্চঙ্গ্যা।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টা। নগরীর নুর আহমদ সড়কে টাইলসের কার্টন ট্রাক থেকে নামিয়ে গুদামে নিচ্ছিলেন ইসমাইল। মধ্যবয়সী ইসমাইলের পরনের শার্ট লেপ্টে আছে ঘামে। ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত মানুষটির যেন দম আটকে যাচ্ছিল !
ইসমাইল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আল্লাহ এবার কী গরম দিছে, আর সহ্য করতে পারছি না। আমাদের তো কাজ না করে উপায় নাই। কাজ করতে হবে, পেটে ভাত দিতে হবে।’
রিকশাচালক মো. জসিম সিআরবিতে গাছের ছায়ায় কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিচ্ছিলেন। গরম কেমন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একবার ভাড়া মেরে আধাঘন্টা বসে থাকতে হয়। পানির পিয়াস লাগে। বৃষ্টি পড়লে শান্তি পাইতাম।’
আসকার দিঘীর পাড়ের মুদি দোকানি অজিত দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘লোডশেডিং মারাত্মক। একবার গেলে বিদ্যুৎ একঘন্টায়ও আসে না। দোকানের ভেতর বসে থাকা দায়। গরমে ক্লান্ত লাগে।’
নগর থেকে হারিয়ে গেছে জলাশয়। কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিশু-কিশোরদের দাপাদাপি দেখা গেছে। গরম থেকে বাঁচতে, একটু স্বস্তি পেতে। নগর থেকে প্রায় হারিয়ে গেছে গাছগাছালিও।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা নিয়ে হতাশার কথা জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা কবি মাজহারুল আলম তিতুমীর। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগেও প্রচণ্ড গরমের দুপুরে সী-বিচে চলে যেতাম। বেড়িবাঁধের সারি সারি ঝাউগাছের ছায়ায় বসে গোটা দুপুর আরামে আনন্দে কাটিয়ে দিতাম। কোত্থেকে হাজির হল সিডিএ ! সাগরপাড়ের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সব গাছ কেটে সাবাড় করে পাথর বসিয়ে রঙ লাগিয়ে দিয়েছে। ফ্লাইওভার, ট্যানেল আর বিচ রোড আশেপাশের শত শত গাছে খেয়ে ফেলেছে। উন্নয়নের ঠেলায় সবুজ শান্তির পতেঙ্গা এখন বৃক্ষহীন মরূদ্যান।’
সারাবাংলা/আরডি/একে