মেট্রোরেলে রঙিন ঈদ
২২ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২২
ঢাকা: মেট্রোরেল, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার মুকুটে আরেকটি পালক। এক দশকের অপেক্ষার পর গত ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। ঠিক তার পরের দিনই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয় মেট্রোরেল। স্বপ্নের এই বাস্তবায়ন নিজচোখে যারা সেদিন দেখতে পারেননি সেই আক্ষেপ ঘুচালেন অনেকেই। ঈদের ছুটিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন মেট্রোরেল।
ইট-পাথরের এই রাজধানীতে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ খুবই সীমিত। ঈদের ছুটিতে শিশুপার্ক, জাতীয় জাদুঘরসহ সরকারি বিনোদনকেন্দ্র এবং প্রদশর্নীর স্থানগুলো বন্ধ থাকায় বিগত দিনগুলোতে এক রকম রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করেই ঈদ কাটিয়েছেন মানুষ। তবে এবারের ঈদে বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে মেট্রোরেল।
মেট্রোরেলে ভ্রমণে ঈদের দিন দুপুর থেকে ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের এলাকা থেকে অনেকেই পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসেন।
যান্ত্রিক সিঁড়ি, টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে যন্ত্রের মাধ্যমে, আবার মেট্রোরেল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে তাও অদৃশ্য কোনো সাউন্ড সিস্টেম থেকে। ট্রেনের দরজা খোলার জন্য নেই কোনো মানুষ। অটোমেটিক খুলে যাচ্ছে দরজা। এসব দেশে কৌতূহল বাড়ছেই। বিস্ময় দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেছেন সবকিছু।
শনিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দিন মেট্রোরেল চালুর সিডিউল ছিল দুপুর ২টা থেকে। তবে সময়ের অনেক আগেই আগারগাঁও স্টেশনে এসে উপস্থিত হন অনেকে। কথা বলে জানা গেল, তাদের বেশীরভাগই প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলে চড়বেন। তাই আগ্রহ ও উচ্ছ্বাসটা ছিল অনেক বেশি।
গেট খুলতেই হৈ-হুল্লোড় করে প্রবেশ করেন যাত্রীরা। মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের জানানো হয় ঈদের শুভেচ্ছা। ভেতরে প্রবেশ করেই তারা বিস্ময় আর কৌতুহল নিয়ে ঘুরে দেখেন পুরো স্টেশন। নির্দেশনাগুলোও মেনে চলতে দেখা গেছে তাদের।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন পলাশ আহমেদ।
প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলে উঠে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। বললেন, মেট্রোরেল বিদেশি সিনেমায় দেখেছি। বাংলাদেশে চালু হওয়ার পর খবরে দেখেছি। ফেইবুকেও ছবি দেখেছি। আজকে সত্যি সত্যি মেট্রোরেলে, ভাবতেই ভালো লাগছে।
দুই সন্তানকে নিয়ে রাজাবাজার থেকে মেট্রোরেল ভ্রমণে এসেছেন আতিক হোসেন। তিনি বলেন, অন্যান্য ঈদে চিড়িয়াখানা এবং পার্কে ঘুরতে নিয়ে যেতাম। এবার নিয়ে এলাম মেট্রোরেলে ঘুরাতে। বাচ্চারা ভীষণ খুশি। আগারগাঁও থেকে উত্তরা গেলাম আবার আসলাম। খুবই কম সময় লেগেছে। কিযে ভালো লাগছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন শাহরিয়ার আলম খসরু। নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, এতো স্মুথ যাত্রা কখনোই পাইনি। বাসা কাছাকাছি হওয়ার পরও মেট্রোরেল ভ্রমণের সুযোগ হয়নি। এবার বন্ধুদের সঙ্গে আসলাম। সময়টা বেশ উপভোগ করেছি।
উল্লেখ্য, ঈদ উপলক্ষ্যে নতুন সূচিতে চলছে মেট্রোরেল। ঈদের দিন দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত যাবে বিদ্যুৎচালিত এই উড়াল ট্রেন।
সারাবাংলা/জেআর/এনইউ