ঈদের দিন চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
২২ এপ্রিল ২০২৩ ২৩:০০
ঢাকা: ঈদের দিন জাতীয় চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল। এদিন সকাল ১০টার আগে থেকেই চিড়িয়াখানায় প্রবেশর জন্য দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
শনিবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৩টার পর পুরো চিড়িয়াখানা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। বিভিন্ন খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে পছন্দের পশু-পাখিকে দেখার জন্য নিয়মিত যুদ্ধ করতে হয়েছে অনেক দর্শনার্থীকে। ঈদের দিন চিড়িয়াখানায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার দর্শক প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। তবে আগামীকাল এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, রাজধানীবাসীর বিনোদনের অন্যতম জায়গার একটি মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা। প্রতিবছর ঈদের দিন থেকে পরবর্তী তিন/চার দিন সেখানে থাকে উপচে পড়া ভিড়। এবার ঈদুল ফিতরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদের দিন প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করে হাজার হাজার দর্শনার্থী।
জানা গেছে, এবার দর্শনার্থীদের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল জলহস্তি আর জেব্রার ঘরে জন্ম নেওয়া নতুন দুই অতিথি। আর বছরজুড়ে চিড়িয়াখানা জন্ম হওয়া অসংখ্যা হরিণ শাবক দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দিয়েছে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানায় সম্প্রতি আনা পেলিকেন্ট, লামা, ক্যাগারু ও আফ্রিকান সিংহের ছুটাছুটি দর্শনার্থীদের মনে বাড়তি খোরাক জুগিয়েছে। এছাড়া বাঘ, হাতি, চিতা, উল্লুকের খাঁচাগুলোর সামনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার পার্কে শিশুদের ট্রেনে ভ্রমণ, বিভিন্ন দোলনায় চড়া চিল বাড়তি আনন্দ।
দর্শনার্থীরা বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে অনেক প্রাণী ঘুমিয়ে আছে। আবার বাঘ, সিংহ ও ভল্লুক খাঁচার মধ্যে শুয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে। ফলে বিনোদনে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তারপরেও এবার চিড়িয়াখানার পরিবেশ আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হয়েছে।
সাভার থেকে মায়ের সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে ১০ বছর বয়সী ফারিয়া। সে সারাবাংলাকে বলে, ‘চিড়িয়াখানায় ক্যাঙ্গারু, উট আর বাঘ দেখে অনেক ভালো লেগেছে।’
শনিবার রাতে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে চিড়িয়াখানায় ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজারের মতো দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। আগামীকাল রোববার (ঈদের পরদিন) চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন চিড়িয়াখানায় ১২ থেকে ১৫ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেন। তবে ছুটির দিনে এই সংখ্যা ৩০ হাজার থেকে ৩২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। আর ঈদের দিন থেকে পরবর্তী তিন/চার দিন এই সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজারে উন্নীত হয়।’
রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমরা দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রথমত, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং দ্বিতীয়ত, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করা। নিরাপত্তার জন্য আমরা দর্শনার্থীদের প্রবেশপথে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে প্রবেশের সময় তাড়াহুড়া করতে গিয়ে কোনো প্রকার ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। এছাড়াও দর্শনার্থীরা যাতে চিড়িয়াখানার ভেতরে নিরাপদে ঘোরাফেরা করতে পারে, তাদের জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয়- সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৮৬ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত চিড়িয়াখানাটি ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১৩৩ প্রজাতির ৩ হাজার ৩৩৮টি প্রাণী রয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম