ভৈরবে ব্লাস্ট রোগে নষ্ট ব্রি-২৮ ধান, দিশেহারা কৃষকরা
২৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৭
ভৈরব: ভৈরবে হাওরসহ সর্বত্র এখন চলছে ধান কাটার ধুম। পুরো বৈশাখ জুড়ে চলবে ধান কাটার উৎসব। তবে আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধানচাষিরা এবার লোকসানের মুখে পড়েছেন। ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের কারণে দিশেহারা কৃষকেরা। তাই সরকারের কাছে সহযোগিতার দাবি তাদের।
এদিকে কৃষি অফিস বলছে, ব্রি-২৮ ধানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই এ জাতের ধান আবাদ না করে কৃষকরা যেন ব্রি-৮৮.৯২ এবং বঙ্গবন্ধু- ১০০ জাতের ধান চাষ করে। তাহলে ফলন ভালো হবে এবং কৃষকরাও লাভবান হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভৈরবে এখন বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাবারের যোগান দেয় কৃষকরা। কিন্ত চলতি মৌসুমে ব্রি-২৮ জাতের ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা কৃষক।
কৃষকরা জানান, টাকা-পয়সা খরচ করে শ্রম-ঘাম ঝরিয়ে তারা আগাম জাতের উফসি উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান করেছেন। কিন্ত সেই ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সার-কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এছাড়া কৃষি অফিস থেকেও সহযোগিতা তারা পায়নি।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ভৈরবে ৬ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফসি জাতের উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। শুরুতে ২৮ ধানের ফলন খুব সুন্দর হয়েছিল, কিন্ত ধানে শীষ আসার পর দেখা যায় জমির সমস্ত ধান সাদা ও চিটা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। ১ কানি জমিতে ৪০ মণের পরিবর্তে ১০/১২ মণ ধান পাওয়া গেছে। এতে করে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে কৃষকদের।
কালিকাপ্রসাদের কৃষক সেলিম মিয়া, বোরহান মিয়া আফজাল মিয়া জানান, প্রথম দিকে জমিতে সুন্দর ধান হয়েছে। পরে আস্তে আস্তে ধান চিটা ধরে মরে গেছে। এখন তাদের খরচও উঠবে না।
সাদেকপুর ইউনিয়নের কৃষক রাফি উদ্দিন, রসুলপুর গ্রামের সাইজউদ্দিনসহ একাধিক কৃষকরা জানান, ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করেছি। কারণ নিচু জমির পানি তাড়াতাড়ি চলে আসায় সেসব জমিতে এই ধান চাষ করেছি। এসব জমি আবাদ করতে সার, কীটনাশক, কলচার্জসহ প্রায় ৩০/৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হঠাৎ ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন যে পরিমান ধান পাওয়া গেছে তাতে খরচও মিটবে না।
কালিকাপ্রসাদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া জানান, তার ইউনিয়নে ব্রি-২৮ জাতের ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধান নষ্ট হয়েছে। তাই কৃষকদের যেন সরকারি প্রণোদনাসহ সহযোগিতার দেওয়া হয়।
ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, ভৈরবে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে, আশা করছি ফলন ভালো হবে। তবে ব্রি-২৮ জাতের ধানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই এ ধান চাষ না করার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে, এ জাতের ধানের পরিবর্তে তারা যেন ব্রি-৮৮ এবং বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধান চাষ করেন। তাহলে ফলন ভালো হবে এবং কৃষকরাও লাভবান হবেন।
সারাবাংলা/এমও