Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বঙ্গবন্ধু মে দিবসের ছুটি দিয়েছিলেন, অথচ শ্রমিকরা এখন তা পান না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ মে ২০২৩ ১১:৩৯

ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি শ্রমিক নেতা মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর মে দিবসকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। আজ সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সরকারি আধা সরকারি স্বায়ত্বশাসিত সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি ছুটি ভোগ করে থাকেন। অথচ দেশের মধ্যে অনেক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান আছে মে দিবসের ছুটি ভোগ করতে পারে না। বর্তমান সরকারের আমলেও শ্রমিকের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। শ্রমিকদের অধিকার হরণ বন্ধের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১ মে) মে দিবস উপক্ষে পুরানা পল্টন কমিউনিস্ট পার্টির অফিসের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এম রাশেদা। বক্তব্য রাখেন দলটির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ অনেকে।

মনজুরুল আহসান খান বলেন, “দেশের আশিভাগ শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। স্বাধীনতা ও শোষণমুক্তির জন্য সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করেছে, জীবন উৎসর্গ করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশে এক শ্রেণির মানুষ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের বদল হয়নি। সরকার লুটেরা মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় শ্রমিকদের বিদ্যমান অধিকারগুলো একের পর এক হরণ করছে। এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ‘শ্রমজীবী ও শিল্প রক্ষা আন্দোলন’ গঠিত হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমরা আন্দোলন করে শ্রমিকের অধিকার হরণ বন্ধে সরকারকে বাধ্য করবো।’ তিনি সব ট্রেড ইউনিয়নসমূহের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

দলের সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘দেশে দুঃশাসন চলছে। এর অবসান করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে, আবার বাংলার মাটিতে আবার ফিরে আসবে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ। এরই মাধ্যমে আমারা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এই তিন সরকারই লুটেরা সরকার। এদের বিদায় করতে হবে। এই তিন সরকারের আমলেই শ্রমিকরা নানান সমস্যায় জর্জরিত। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারি অফিসারদের বেতন-ভাতা বেড়েছে। শ্রমিক সমাজের বেতন-ভাতা বাড়েনি।’ এসময় কাজের বুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ শ্রমিকদের নুন্যতম মজুরি ২০ হাজার টাকা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের ২৫ হাজার টাকা ও গামেন্টস শ্রমিকদের নিয়োগ পত্র দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘গণতন্ত্র ধ্বংস ও শ্রমিকদের অধিকার হরণ করার জন্য পরিষেবা খাতে আন্দোলন সংগ্রাম নিষিদ্ধ করার জন্য আইন করা হচ্ছে।’

প্রিন্স বলেন, ‘শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসারে জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষগুলোকে শ্রমিকদের এ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে অথবা যথাসময় এমন মজুরি দেবে, যাতে তাদের প্রয়োজন মিটে যায়। তাতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দূরত্ব অনেকখানি লাঘব হবে। অন্যথায়, শ্রমিকদের অধিকার হরন করে কোন সরকার বাংলার মাটিতে ঠিকে থাকতে পারবে না।’

সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালি পল্টন থেকে প্রেসক্লাব এলাকা ঘোরে। এর আগে, গণসংগীতের মধ্য দিয়ে এই সমাবেশ শুরু হয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও

বঙ্গবন্ধু মে দিবসের ছুটি শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর