২ মামলায় মামুনুলের জামিন স্থগিত
১০ মে ২০২৩ ২০:৩২
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জে রিসোর্ট কাণ্ডের পর আন্দোলনের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এ বিষয়ে আগামী ১২ জুন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী, আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনালে মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ‘তিন মামলায় হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে দেওয়া হাইকোর্টের জামিনের মধ্যে দুই মামলার জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ।’
গতকাল (৯ মে) বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামুনুল হককে তিন মামলায় জামিন দিয়েছিলেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবু রায়হান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
পরে মামুনুল হকের আইনজীবীরা জানান, তার বিরুদ্ধে মোট ৪১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে আগে ১৭টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। আজ তিনটি জামিন পেলেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি এবং সোনারগাঁও থানায় অপর মামলাটি দায়ের করা হয়। এই মামলাগুলো ২০২১ সালের।
এর আগে, গত ৩ মে মামুনুল হকের জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে তাকে ঢাকার পল্টন ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের করা পাঁচ মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। ওইদিন আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
পরে আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা জানান, এখন পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৫ মামলাসহ মোট ১৮টি মামলায় জামিন পেয়েছেন মামুনুল হক। তার বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা ৪১টি।
এর মধ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে সহিংসতা ও নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার একটি রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। এক পর্যায়ে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাকে ওই নারীসহ ছাড়িয়ে নেন হেফাজত কর্মীরা।
এর পর একই বছরের ১৮ এপ্রিল মাওলানা মামুনুল হককে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেন মামুনুল হকের দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৪১টি মামলার মধ্যে রাজধানীর মতিঝিল থানায় চারটি, পল্টন থানায় নয়টি, নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় তিনটি, সিদ্ধিরগঞ্জে তিনটি, হাটহাজারী মডেল থানায় আটটি, খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় একটি, কুমিল্লার চান্দিনা থানায় একটি, রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি, মোহাম্মদপুর থানায় একটি, দারুস সালাম থানায় পাঁচটি ও মিরপুর মডেল থানায় তিনটি রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও দুটি মামলা বিচারাধীন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম