Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফিরেই আগুন ঝরালেন ফিজ, বাংলাদেশের সিরিজ জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
১৫ মে ২০২৩ ০০:২৫

জয়ের জন্য শেষ ওভারে আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। ৯ বলে খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকা আয়ারল্যান্ডের মার্ক আদায়ের তখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হুমকি। নয় নম্বরে ব্যাটিং করতে নামলেও আইরিশ পেসার আগের ওভার থেকেই যে তুলে নেন ১৪ রান।

তবে শেষ ওভারে তামিম ইকবাল বল তুলে দেন তরুণ হাসান মাহমুদের হাতে। ওভারের প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে মার্ক আদায়েরকে বোল্ড করেন হাসান। এক বল পর তুলে নেন আরও এক উইকেট। সেখানেই ম্যাচটা হেলে পরে বাংলাদেশের দিকে। শেষ দিকের টানটান উত্তেজনা শেষে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল তামিম ইকবালের দল। বৃষ্টির কারণে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটা পরিত্যক্ত হয়েছিল। বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছে ৩ উইকেটে।

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজটা অনুষ্ঠিত হলো ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ড। রোববার (১৪ মে) তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শেষের নায়ক তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ হলেও তার আগে জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আগে ব্যাটিং করে ২৭৪ রান তুলে বাংলাদেশ। পরে আইরিশরা যেভাবে জবাব দিচ্ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের সংগ্রহটা কমই হয়েছে। সফকারীদের দারুণভাবে জবাব দিচ্ছিলেন স্বাগতিকরা।

তবে মোস্তাফিজুর রহমান আইরিশদের পথ আটকেছেন বার বার। অফ ফর্মের কারণে প্রথম দুই ওয়ানডেতে সেরা একাদশে সুযোগ পাননি মোস্তাফিজ। আজ সুযোগ পেয়েই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে মাত্র ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেওয়া মোস্তাফিজই আজ জয়ের নায়ক।

২৭৪ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় ১৭ রানের মাথায় স্টিফেন দোহানিকে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক আন্দ্রে বালবারনি দারুণ একটা জুটি গড়ে তোলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ১০৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। ইবাদত হোসেনকে তুলে মারতে গিয়ে বালবারনি সীমানায় ক্যাচ দিলে এই জুটি ভাঙে। ৭৮ বল খেলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন আইরিশ অধিনায়ক।

খানিক বাদে দুর্দান্ত খেলতে থাকা পল স্টার্লিংকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর দুর্দান্ত এক ক্যাচ হওয়ার আগে ৭৩ বল খেলে ৪টি চার ২টি ছয়ে ৬০ রান করেন স্টার্লিং। পরপর সেট দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে তখন স্বস্তি। কিন্তু এই স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি। এরপর গত ম্যাচের মতো আজও দাঁড়িয়ে যান হ্যারি টেক্টর ও লরকান টকার।

চতুর্থ উইকেটের মাত্র ৬৫ বলে ৭৯ রান তোলেন দুজন। দলীয় ২২৫ রানের মাথায় পার্ট টাইম বোলার নাজমুল হোসেন শান্তর বলে ৪৮ বলে ৪৫ রান করে আউট হন টেক্টর। ৫৩ বল খেলে ৫০ রান করা টকারকে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তারপর নিয়মিতই প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

এর মধ্যেই শেষে দিকে মার্ক আদায়ের দাঁড়িয়ে যান। হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে শেষের হিসেবটা অবশ্য শেষ পর্যন্ত মেলাতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৯ রানে থেমেছে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ৪৪ রানে চারটি ও হাসান মাহমুদ ৪৪ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে ব্যাটিং করে ২৭৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে ছিটকে যাওয়া সাকিব আল হাসানের জায়গায় রনি তালুকদারকে আজ একাদশে ডাকে বাংলাদেশ। লিটন দাসকে চার নম্বরে ঠেলে একাদশে ডাক পাওয়া রনিকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

প্রথমবার দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামা রনিকে একদমই স্বাচ্ছন্দ মনে হয়নি। ১৪ বলে ৪ রান করে ফিরেছেন দলীয় ১৮ রানের মাথায়। অপরপ্রান্তে তামিম ইকবালকেও স্বাচ্ছন্দে দেখা যায়নি। ওয়ানডেতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না তামিমের। আগের নয় ইনিংসে ফিফটির দেখা পাননি। আজ ব্যাটিংয়ে দাপট দেখাতে না পারলেও তামিম অবশ্য ফিফটি পেয়েছেন।

৮২ বলে ৬টি চারের সাহায্য ৬৯ রান করে ফিরেছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। তামিম ফেরার আগেই ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, লিটন দাস। থিতু হয়েছিলেন তিনজনই। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পাওয়া শান্ত আজও খেলছিলেন দুর্দান্ত। দারুণ খেলতে থাকা শান্ত ক্রেইগ ইয়ংয়ের দারুণ এক সুইং বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৩২ বলে ৩৫ রান করে।

ওপেনার লিটন চারে নেমে খেলছিলেন দারুণ। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে লিটন টপঅ্যাজ হয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন। এরপর ডকরেলের নিচু হওয়া স্পিন বলে বোল্ড হয়ে যান তৌহিদ হৃদয়। খানিক বাদে তামিম ফিরলে ১৮৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

সেখান থেকে মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৭৫ রান তোলেন দুজন। দারুণ এক ছক্কা হাঁকানোর পর সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন মুশফিক। ফেরার আগে ৫৪ বল খেলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ৪৫ রান করেছেন। মুশফিক ফেরার পরপরই স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন মিরাজ। স্পিনিং অলরাউন্ডার ৩৯ বল খেলে ৩টি চারের সাহায্যে করেছেন ৩৭ রান।

এই দুজন ফেরার পর অভিষিক্ত মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইবাদত হোসেন চৌধুরী ফিরেছেন মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে। ৪৮.৫ ওভারে ২৭৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ।

সারাবাংলা/এসএইচএস/পিটিএম

আয়ারল্যান্ড জয় বাংলাদেশ সিরিজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর