‘বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল’ সংস্কারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ
২৫ মে ২০২৩ ১৬:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংস্কারের দাবি ও পরিত্যক্ত ঘোষণার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল চত্ত্বরে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশের কারণে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, বান্দরবান বা দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলামুখী বাস, মিনিবাস ও চেয়ার কোচ চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে অনেক যাত্রীই সময় মতো তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি।
বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, ‘বহদ্দারহাট আঞ্চলিক বাস টার্মিনাল আমাদের লড়াইয়ের ফসল। এটা চট্টগ্রামের একমাত্র বড় বাস টার্মিনাল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে বহুমুখী সমস্যায় এটা বর্তমানে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় একবছর আমরা টার্মিনালে প্রবেশ করিনি। কারণ এখানে দেয়াল, বিদ্যুৎ, বিশ্রামাগার, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘পরে আমাদের সঙ্গে চুক্তির পর কিছু কিছু জিনিস বাস্তবায়ন করলে আমরা আসি। এখানে প্রতিদিন মালিক সমিতি থেকে গাড়িপ্রতি ৩০ টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। তবুও এখানে কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। বৃষ্টি পড়লে পানিতে ডুবে যায় পুরো টার্মিনাল। শহরের রাস্তাঘাট সব তিন ফুট করে উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু টার্মিনাল আগে যা ছিল তাই আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) এক কর্মকর্তার কাছ থেকে শুনেছি, ভবিষ্যতে এটা পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হবে। হয়তো বা এখানে বড় বড় বিল্ডিং হবে। আমরা একসময় জেল রোডে ছিলাম, চেরাগী পাহাড়ে ছিলাম। এরপর এখানে এসেছি। আমরা রোদে পুড়েছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি। সরকারের যে বড় বড় মেগা প্রকল্প হয় সেখানে টার্মিনালও অন্তর্ভুক্ত। সব হয়, কিন্তু কোনো টার্মিনাল হয় না।’
মৃণাল চৌধুরী বলেন, ‘বহদ্দারহাট টার্মিনালের এরকম বেহাল দশায় মালিকপক্ষেরও মাথা ব্যাথা নেই, আবার সিডিএও নিশ্চুপ। এরকম পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে ও যাত্রীদের সুবিধার্থে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় নেই। এ অবস্থায় দ্রুত বাস টার্মিনাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে গণপরিবহন বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছা বলেন, ‘ইজারাদার নিয়মিত টাকা নিলেও টার্মিনালে কোনো আলোর ব্যবস্থা করেনি, পাহারাদার নেই, সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নেই। টার্মিনালের একমাত্র পুলিশ ফাঁড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ, মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ আশংকাজনকভাবে বেড়েছে।’
৭ জুনের মধ্যে বাস টার্মিনালের সংস্কারসহ বিদ্যমান নানা সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ না নিলে ৮ জুন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দরবানে পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানান এই শ্রমিক নেতা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছার সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের (কাপ্তাই) সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, পশ্চিম পটিয়া আনোয়ারা ও বাঁশখালী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহিন, বাঁশখালী সাতকানিয়া ও চকরিয়া সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. হোসেন ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল শ্রমিক পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল কবির প্রমুখ।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম