Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থনীতি সমিতির ২০ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ মে ২০২৩ ১৮:৩৮

ঢাকা: আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। প্রস্তাবিত এই বাজেট চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন গুণ এবং জুনে সরকারের পেশ করতে যাওয়া প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ২ দশমিক ৭ গুণ বেশি। প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে রাজস্ব আয় থেকে ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ২৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা। যা চলমান অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪ দশমিক ৪২ গুণ বেশি। অর্থাৎ মোট বাজেটের ৯৩ দশমিক ২ শতাংশের যোগান দেয় রাজস্ব। বাকি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ তথা ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি বাজেট।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অর্থনীতি সমিতির অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-২৪: বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম। এতে ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

বিজ্ঞাপন

আবুল বারকাত বলেন, ‘অর্থনীতি সমিতির ঘোষিত বাজেট সম্প্রসারণশীল বাজেট। এখানে ২৪টি মূল পয়েন্টের উপস্থাপন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে— বৈষম্য ও অসম দারিদ্র্য নিরসন, সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তাবেষ্টনী, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়, রেমিট্যান্স, পুঁজিবাজার, ব্যাংক, বৈদেশিক খাত, সরকারি ঋণ, কৃষি ভূমি, ভূমি মামলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়, প্রতিবন্ধী মানুষ, প্রকৃতি ও সরকারি অর্থের সংস্থান প্রভৃতি। এর আগে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছিল বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।’

তিনি বলেন, ‘বিকল্প বাজেটে কালো টাকাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত ৫০ বছরে কালো টাকার পরিমাণ মোট ১৩২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার মাত্র ২ শতাংশ সরকারকে উদ্ধারের প্রস্তাব করেছি। এটা যদি উদ্ধার করা সম্ভব হয়, তাহলে সরকার ২ লাখ ৬৫ হাজার ৭০ কোটি টাকা পাবে।’

অন্যদিকে, অর্থপাচার প্রসঙ্গে অধ্যাপক বারকাত বলেন, ‘গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের মোট পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বিকল্প বাজেটে বলা হয়েছে, ওই অর্থের মাত্র ৫ শতাংশ যদি উদ্ধার করা যায় তাহলে সরকার ৫৯ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা পাবে। দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ উদ্ধারের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান উৎস হতে পারে কালো টাকা ও অর্থপাচারের ওই খাত।’

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বলেন, ‘ধনীদের কর কমালে প্রবৃদ্ধি বাড়ে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের কর কমালে কর্মসংস্থান হয়। আমাদের উদ্দেশ্য বিপজ্জনক বৈষম্য কমানো। বিকল্প বাজেট বাস্তবায়ন করলে ১০ বছরের মধ্যে বিপজ্জনক বৈষম্য কমানো সম্ভব।’

অধ্যাপক বারকাত বলেন, ‘এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের মধ্যে আয়, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর অর্থাৎ আয়কর প্রস্তাব ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। দেশে কোটি টাকার বেশি আয়কর দেন ১০০ জনের মতো। আমাদের গবেষণা বলছে, এই সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার মানুষ কোটি টাকার ওপরে কর দেওয়ার কথা। আর সম্পদ কর নেওয়া হয় না। এই খাতে ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা আসা সম্ভব। ভ্যাট খাতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা বর্তমান সরকারের বাজেটের মতোই। এই খাতে হাত দেয়নি, কারণ ভ্যাট বৈষম্য হ্রাসে কোনো সহায়তা করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এনবিআর বহির্ভূত কর- যেমন মাদক শুল্ক ১৫২ কোটি টাকা। যেখানে ৩০ হাজার কোটি টাকা আসতে পারে এবং ভূমি রাজস্ব থেকে আসবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর বাজেট ঘাটতি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা বিদেশি অর্থায়ন ও ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়ার পক্ষে নেই। ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বিকল্প বাজেটের ঘাটতি পূরণে সঞ্চয়পত্র, বন্ড, বিদেশে বসবাসরত নাগরিক ও কোম্পানি থেকে নেওয়ার কথা বলেছি।’

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

অর্থনীতি সমিতি বিকল্প বাজেট

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর