Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজেটে জ্বালানিখাতে ১১ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২৩ ১৬:২৩

ঢাকা: বলা হয়েছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে ভর্তুকির লাগাম টেনে ধরা হবে। সে লক্ষ্যে নিয়মিত বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম সমন্বয় করে বাড়ানোও হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও জানিয়েছিলেন, নিয়মিত দাম সমন্বয়ের শর্ত আইএমএফ’র ছিল। কিন্তু গত বছরের লোডশেডিংয়ের ধকল কাটিয়ে না উঠতেই সামনে আসে ডলার সংকট। যার চরম প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। যা সামাল দিতে তথৈবচ দশা বিদ্যুৎ বিভাগের।

অন্যদিকে, গ্যাসের অভাবে প্রস্তুতি নিয়েও নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। আবার দফায় দফায় দাম বাড়ানোর কারণে ভোক্তাদেরও নাজুক পরিস্থিতি। এ অবস্থার মধ্যে আসছে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট। এতে ৪১ হাজার ৩৭১ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা বেশি।

বিজ্ঞাপন

নীতি নির্ধারকরা বলছেন, এবার বিদ্যুৎখাতে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন গুরুত্ব পাচ্ছে বাজেটে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ উৎস্য থেতে গ্যাস উত্তোলন, সঞ্চালন, পাইপলাইন বৃদ্ধি অগ্রাধিকার পাবে জ্বালানি খাতে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎখাতের জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার ২০ কোটি ৬ লাখ টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ খাতে ৬১টি প্রকল্পে এ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ১১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৬৯ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৪ হাজার ১৯৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা (ইসিএ ৭৭৮.১৫ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩ হাজার ৪১৬ কোটি ৮১ লাখ) এবং প্রকল্প সাহায্য (পিএ) ২২ হাজার ৩৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। মোট ৩৮ হাজার ২০ কোটি ৬ লাখ টাকার মধ্যে পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি ৬ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জ্বালানি খাতে বাজেটে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ খাতে ৪১টি প্রকল্পে এ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ৫২০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা, নিজস্ব অর্থায়নে ২৫ প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৪১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে ৭৬৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা বাজেটে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে। জ্বালানি খাতে থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে ২৬ কোটি ৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে জ্বালানি খাতের যে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ বাজেটে চাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রকল্প ছাড়াও পরিচালনা ব্যয় হিসেবে প্রস্তাব থাকবে ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসছে অর্থবছরের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাজেটে বরাদ্দের যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, তা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বেশি। আসছে অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাব করা হবে ৪১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর ২০২২-২৩ এ ছিল ৩০ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে ২০২১-২২ এ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতে ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তা আপাতত আর হচ্ছে না।

বরাবরের মতো এবারের বাজেটেও সবচেয়ে বেশি বরাদ্দের ক্ষেত্রে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। পায়রা, রামপালের পর এবার মাতারবাড়ি-রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার পথে। আর সেই বিবেচনায় বাজেটে সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামোর উন্নয়ন গুরুত্ব পাচ্ছে। পাশাপাশি নিজস্ব উৎস থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জ্বালানিতে তেল-গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন আরও মজুত সক্ষমতা বাড়ানোও অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

যদিও অর্থবছরের শুরুর দিকে গত আগস্টে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়। সেই সঙ্গে বছরের শুরুতে কিছু খাতে গ্যাসের দাম দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে কিছুটা ঘাটতি পূরণ করা হয়েছিল। এছাড়া ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এই বরাদ্দের অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুতের সঞ্চালন এবং বিতরণের ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখনও প্রতি ইউনিটে আমাদের ৫ থেকে ৬ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে।’

এছাড়া গ্যাসফিল্ডে ৪০ থেকে ৫০টি ড্রিলিং হবে, সেইসঙ্গে আপস্ট্রিম থেকে ডাউনস্ট্রিম পর্যন্ত অটোমোশনে পরিণত করার কথাও জানান তিনি।

সারাবাংলা/জেআর/এমও/একে

২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট জ্বালানিখাত বাজেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর