‘প্রস্তাবিত বাজেটে তরুণরা তামাক ব্যবহারে উৎসাহিত হবে’
১ জুন ২০২৩ ১৭:২৩
ঢাকা: ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে নিত্যপণ্যের তুলনায় আরেক দফা সস্তা হয়ে পড়বে তামাকপণ্য। তরুণরা তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে, তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতা বাড়বে এবং একইসঙ্গে এ খাতে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।’
বৃহস্পতিবার (১ জুন) তামাকবিরোধী জোট প্রগতির জন্য জ্ঞানের (প্রজ্ঞা) পক্ষ থেকে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞা জানায়, প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্ন স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরামূল্য ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শলাকার দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র পঞ্চাশ পয়সা (১২.৫০ শতাংশ)। এই স্তরের কর হার প্রায় অপরিবর্তিত রেখে কেবল মূল্যস্তর বাড়ানোর কারণে বর্ধিতমূল্যের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তামাক কোম্পানির পকেটে চলে যাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৭ টাকা (৩.০৮ শতাংশ), উচ্চ স্তরে ১১১ টাকা থেকে ১১৩ টাকা (১.৮০ শতাংশ) এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৪২ টাকা থেকে ১৫০ টাকা (৫.৬৩ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রেখে প্রতি দশ গ্রাম জর্দা ও গুলের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৫ টাকা ও ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বিড়ির দাম ও কর হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যের দাম নামমাত্র বাড়ানো অথবা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরও সস্তা হয়ে পড়বে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেন, ‘নিত্যপণ্যের তুলনায় সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশ দখলে থাকা কমদামি সিগারেটের মূল্যস্তর বা খুচরামূল্য সামান্য পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে এই স্তরের সিগারেটের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
প্রস্তাাবিত বাজেটে ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য আমদানির সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা তরুণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্ত করার মাধ্যমে ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। চূড়ান্ত বাজেটে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে, দীর্ঘমেয়াদে ৪ লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠির অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং সিগারেট খাত থেকে গতবছরের তুলনায় সরকারের ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এই বাড়তি রাজস্ব আইএমএফের ঋণ শর্ত পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলেও মত সংগঠনটির।
সারাবাংলা/জেজে/এমও