Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংসদে এটুআই বিল উত্থাপন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ জুন ২০২৩ ২৩:২১

ঢাকা: সরকারি সেবা ডিজিটালে রূপান্তর ও নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করতে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) নামে একটি নতুন সংস্থা করা হচ্ছে। এজন্য এজেন্সি টু ইনোভেট বিল-২০২৩ জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে।

বুধবার (৭ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তবে বিলটির বিরোধিতা করে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জুনাইদ আহমেদ পলক যে নতুন নতুন কোম্পানি খুলতে বিল আনছেন, এটা হচ্ছে ঠিক ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির মতো। সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যকে নিজ হাতে নেওয়ার একটা পাঁয়তারা।

তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আমাদের ট্যাক্স বা ভ্যাট অটোমেশন করতে পারেনি। আপনি যে ট্যাক্স দেবেন তা ঘুষ ছাড়া দেওয়া সম্ভব হবে না। দেশে এখন ঘুষের মালা পরানো হয়েছে। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না। বারবার ভ্যাট-ট্যাক্সকে অটোমেশন করার পরামর্শ দেওয়া হলেও তা করতে পারেনি। ট্যাক্সের থেকে টেবিল মানি বেশি দিতে হয়, এমন কোন দেশ পৃথিবীতে আছে?’

প্রতিমন্ত্রী পলকের উদ্দেশে কাজী ফিরোজ বলেন, ‘শুধু প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে, বা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম ভাঙিয়ে সবকিছু করবেন এটা তো হতে পারে না। এটা জনগণ বোঝে। আপনি যা বলবেন তা হজম করতে হবে, তা তো হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৫ সালে স্টক এক্সচেঞ্জ সম্পূর্ণভাবে অটোমেশন হয়ে গেছে। আর আজ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, উনারা সবকিছু অটোমেশন করেছেন, এটা ঠিক না। যেখানে ১৮ লাখ শেয়ার প্রতিদিন লেনদেন হয়। এক টাকাও এদিক-ওদিক হয় না। এটা উনার নোটিশে থাকা উচিত।’

বিজ্ঞাপন

জবাবে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমি যে বিলটি উত্থাপন করেছি, এর কোনো জায়গায় কিন্তু বলা নেই, একটা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হবে। একটা এজেন্সি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। এটা কোম্পানি গঠনের জন্য আইন নয়, এটা মনে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ, সরকার আইটি পার্ক প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু, বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি সে কাজগুলো করবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে প্রকারান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’র পুনর্জাগরণ বলা যেতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) আইন-২০২৩’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি উত্থাপন করা হলে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠনো হয়।

বিলে বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে এটুআই নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে। এজেন্সি হবে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এই সংস্থার ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপমন্ত্রী হবেন এর সভাপতি।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার উদ্ভাবন ও উন্নয়ন, উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ, পাবলিক সার্ভিসের ইনক্লুসিভ ডিজিটাইজেশন ত্বরান্বিতকরণ, জ্ঞানভিত্তিক সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা, জনগণের দোরগোড়ায় বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ প্রকল্প এবং বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ প্রকল্প নামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও দপ্তর/সংস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সেবা প্রদানসহ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, ই-নথি, ডি-নথি, শিক্ষক বাতায়ন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, জাতীয় কলসেন্টার- ৩৩৩ ইত্যাদির মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে উন্নত সেবা প্রদানে ‘এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)’ মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। পাবলিক সার্ভিসের ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিকের জীবনমানে সৃষ্ট সেবা অধিকতর কার্যকর ও টেকসই করার জন্য ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’ এর প্রতিস্থাপকরূপে স্থায়ী কাঠামো হিসেবে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই)’ নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করা এই আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

এটুআই বিল সংসদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর