বেশি দামে সিগারেট বিক্রি করছে তামাক কোম্পানিগুলো
১৪ জুন ২০২৩ ০০:২২
ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ‘সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট সরবরাহ নিশ্চিতকরণ’র কথা বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত রাজস্ব আদায় ও তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এসআরও জারি করে ‘প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সুস্পষ্ট লক্ষণীয় ও অনপনীয়ভাবে মুদ্রিত’ থাকা বাধ্যতামূলক করেছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের অধিক মূল্যে কোন পর্যায়েই সিগারেট বিক্রয় করা যাইবে না।’ কিন্তু বাজেটে ঘোষিত এই সিদ্ধান্ত মানছে না তামাক কোম্পানিগুলো। বরং তারা বেশি দামে সিগারেট বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) জাতীয় বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপ সংক্রান্ত প্রস্তাবের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বিএনটিটিপি ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সম্মিলিত আয়োজনে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপের পরিপ্রেক্ষিতে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও তামাক বিরোধী জোট (বাটা)’র উপদেষ্টা আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির প্রতিনিধি হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমান, সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা ও প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সিগারেটের প্যাকেটে লেখা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রির মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়। এই ফাঁকি বন্ধে এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট সরবরাহ নিশ্চিতকরণের সিদ্ধান্তের ফলে কর ফাঁকি রোধের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বাজার পরিদর্শনে দেখা যায়, বাজেট ঘোষণার আগে থেকেই তামাক কোম্পানিগুলো সিগারেটরে মূল্য অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বৃদ্ধির হার গতবছরের চেয়েও বেশি।
অন্যদিকে, বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই নতুন মূল্য কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তামাক কোম্পানিগুলো এখনো পুরানো মূল্য মুদ্রিত সিগারেট বিক্রি করে চলেছে। এ অবস্থায় বাজেটে ঘোষিত সিদ্ধান্তের সুফল নির্ভর করছে নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর বাস্তবায়নের ওপর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ভোক্তা অধিকার অধিদফতরকে এই সিদ্ধান্তের যথাযথ প্রয়োগে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, এবারের বাজেটেও তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপে অ্যাডভেলোরেম করারোপ পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে অ্যাডভেলোরেম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ পদ্ধতির প্রচলন না করায় তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং কর ফাঁকি প্রতিরোধে কার্যকর সফলতা পাওয়া যাবে না। তাই রাজস্ব বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দ্রুত সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যে সুনির্দিষ্ট করারোপ জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম