Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ জুন ২০২৩ ১৯:০৮

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় ইলেকশন যখন হবার হবে। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেবে, নির্বাচন হবে। জনগণ ভোট দেবে। যদি আমাকে ভোট দেয় তাহলে আছি, না দিলে নাই। যদি আমার থেকে আরও খুব ভালো কিছু পায় তারা বেছে নেবে- এটা জনগণের ইচ্ছা। আমার কোনো কিছু করার নেই। আমি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি, অন্য কিছু না।

বুধবার (২১ জুন) দুপুরে গণভবনে সম্প্রতি সুইজার‌ল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ থেকে ১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগ দেন। ১৩ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান তিনি। ১৭ জুন তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে দেশে ফেরেন। এর আগে, গত ২৩ থেকে ২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি শক্তি নানামুখী তৎপরতায় লিপ্ত, এতে দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি? এক সাংবাদিকের করা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী এমন পরিস্থিতিতে পড়লেন যে, নির্বাচনের আগ দিয়ে আপনাকে মুক্তি দিতে হবে? আমাদের সংবিধান অনুযায়ী যখন নির্বাচন হওয়ার সুর্নিদিষ্ট সময় আছে, ঠিক সেই সময় নির্বাচন হবে; এটা হলো বাস্তবতা। অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে, অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করে, অনেক রক্ত দিয়েই কিন্তু আমরা একটা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। আপনারা কি চান না এই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকুক? আর গণতান্ত্রিক ধারাটা আছে বলেই দেশটা এগিয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনীতির উপর চাপ বেড়েছে। কারণ, তখন তো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। মরার উপর খাড়ার ঘা হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন পাল্টা স্যাংশন। ইনফ্লুয়েশন বেড়ে গেছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী।’

বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটা ছোট্ট ভূ-খণ্ডে বিশাল জনগোষ্ঠী। ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা- সবকিছু পূরণ করতে হয়। আমাদের জনসংখ্যা অনুযায়ী চাষ উপযোগী জমি সীমিত। তারপরও খাদ্য উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তাটা নিশ্চিত রেখেছি।’ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরার পাশাপাশি মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাদের স্বাধীনতাবিরোধী ছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছে, দেশের গণতন্ত্র হরণ করেছে- তারাই আজ গণতন্ত্রের প্রবক্তা সেজেছে। স্বাভাবিকভাবে তারা কখনোই এদেশের কল্যাণ চাইবে না। তারা একটা ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইবে। সেখানে দেশি-বিদেশি নানারকমের লোকই থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাস আছে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। তাদের যদি পছন্দ হয় ভোট দেবে। না হলে, না দেবে। না দিলে নাই, থাকব না। আমি কি মানুষের ভোট চুরি করতে যাব? দুর্ভার্গ্য হলো যে, আমরাই ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করলাম। আর আমাদের যারা ভোট চোর বলে তারা তো ভোট ডাকাত। যাদের উত্থানটাই হয়েছে ডাকাতি করে, খুন করে, হত্যা করে।’

আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে জানিয়ে এই ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তার সরকারের নানামুখী পদেক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারপরও নির্বাচন নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে? কারা তুলছে? যারা এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনটা পছন্দ করছে না। এত দম বন্ধ, দম বন্ধ করার কিছু আছে বলে মনে করি না! খুব সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। সুন্দর ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ বিদ্যুতের একটু সমস্যা ছিল। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছিলাম। সেই সমস্যাটাও আস্তে আস্তে কেটে যাবে। একটু তো সহনশীল হতে হবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে ২০২৬ সালের মধ্যে। এই সময়ের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা কার আছে, বা যোগ্যতা কার আছে, বা কে পারবে? জনগণ তাকে বেছে নেবে। যদি আমার থেকে আরও খুব ভালো কিছু পায় নেবে তারা- এটা জনগণের ইচ্ছা। আমার কোনো কিছু করার নেই। এখানে আমার কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নাই। কাজেই আপনাদের এত টেনশন করার কিছু নাই। ওরা আন্দোলন করছে করুক, দেখি আমরা। আমি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি, অন্য কিছু না।’

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর