Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজশাহীতে ৩৭ হাজার কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রির আশা

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুন ২০২৩ ১১:২২

কোরবানির পশুর হাট। ছবি: সারাবাংলা

রাজশাহী: রাজশাহী বিভাগে এবার ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৩টি কোরবানির পশু লালন-পালন করা হয়েছে। যা দেশের ৯ বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব পশু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে। তাই এবার কোরবানির পশু বিক্রি করে বিভাগটির খামারি ও ব্যবসায়ীরা ৩৭ হাজার কোটি টাকা আয় করবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, দেশে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি গবাদি পশু। আর কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি পশুর। উদ্বৃত্ত থাকবে ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু। ৯ বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৩টি পশু রয়েছে রাজশাহী বিভাগে। আর সবচেয়ে কম ৪ লাখ ১০ হাজার ২২৫টি পশু রয়েছে সিলেট বিভাগে। এছাড়া রংপুর বিভাগে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৫১টি, বরিশালে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬টি, ঢাকায় ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৪টি, ময়মনসিংহে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭টি, খুলনায় ১৫ লাখ ১১ হাজার ৭০৮টি এবং চট্টগ্রামে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ১২৮টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী বিভাগে গরু-মহিষ যেমন বেশি, তেমনি বেশি রয়েছে ছাগলও। সারাদেশে এবার কোরবানির জন্য ছাগল রয়েছে ৫৩ লাখ ৫ হাজার ৮ হাজার ২৭টি। এরমধ্যে ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৪৫০টিই রয়েছে রাজশাহীতে। অন্য ছাগলগুলো রয়েছে দেশের বাকি ৮ বিভাগে। রাজশাহী বিভাগে কোরবানির জন্য ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৫৬টি ভেড়াও প্রস্তুত রয়েছে।

খামারিরা বলছেন, গত তিন বছর থেকে কোরবানিতে করোনাভাইরাসসহ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। তবে সব ধাক্কা সামলিয়ে উঠে কোরবানি পশুর প্রস্তুত করা হয়েছে। সঠিক দাম পেলে লাভ ভালো পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে জানা গেছে, দেশের মধ্যে রাজশাহী বিভাগেই সবচেয়ে বেশি কোরবানির পশু রয়েছে। এগুলো বিক্রি হলে খামারিদের হাতে আসবে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। বিভাগের আট জেলায় এবার ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬১টি ষাঁড়, ১ লাখ ৯৭ হাজার ২১০টি বলদ, ২ লাখ ২৭ হাজার ১৫২টি গাভি মিলে মোট গরু রয়েছে ১১ লাখ ৬০ হাজার ৭২৩টি। আর মহিষ রয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ২টি। বিভাগের ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৩ জন খামারির কাছে আছে মোট ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৩টি গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। আর বিভাগের আট জেলায় চাহিদা ২৪ লাখ ১২ হাজার ৬২৩টি। উদ্বৃত্ত ২০ লাখ ৬৬ হাজার ১২০টি পশু চলে যাবে দেশের অন্য বিভাগগুলোতে।

জানা গেছে, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে রাজশাহীর গ্রামেগঞ্জের পশুহাটগুলো জমে উঠেছে। রাজশাহীর সিটিহাটও এখন বসছে প্রতিদিন। শহরের উপকণ্ঠে থাকা এই হাটটি উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুহাট। এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁর পশু আসছে। ব্যাপারীরা এখান থেকে পশু কিনে ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের নানাপ্রান্তে।

এই হাটের ইজারাদার একজন ফারুক হোসেন ডাবলু জানান, গত বুধবার থেকে প্রতিদিন হাট বসানো হচ্ছে। বেচাকেনাও জমে উঠেছে। হাটে পশুর দাম স্বাভাবিক। ক্রেতারা দামদর করেই পশু কিনছেন। বিক্রেতারাও বিক্রি করছেন।

রাজশাহীর সিটিহাটে চট্টগ্রাম থেকে গরু কিনতে এসেছেন ব্যাপারী আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, ‘সিটিহাটে আসি কম দামে গরু কিনতে। অন্য স্থানের চেয়ে এখানে কম দামে গরু পাওয়া যায়। দাম কম না হলে আমাদের লাভ হবে না। কেনার পর বিক্রি পর্যন্ত নানারকম খরচ আছে। রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামে নিতেই রাস্তায় বেশকিছু এলাকায় কয়েকহাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। এটা ব্যাপারীদের জন্য বাড়তি খরচ।’

রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদের পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আবহমানকাল থেকেই রাজশাহী অঞ্চলে প্রচুর গবাদিপশু উৎপাদন হয়। আবার সরকারের সব বিভাগেই গবাদি পশুর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সমানভাবে প্রণোদনা দেয়। তখন রাজশাহী বিভাগের উৎপাদন অন্য বিভাগের চেয়ে আরও বেশি বেড়ে যায়। এবারও রাজশাহী বিভাগের উদ্বৃত্ত গবাদি পশু দেশের অন্য স্থানে চলে যাবে। এবার রাজশাহী বিভাগে যে পশু রয়েছে তার সব বিক্রি হলে খামারিদের হাতে ৩৬ হাজার ৬২৩ কোটি নগদ টাকা আসবে।’

সারাবাংলা/এমই/এনএস

কোরবানির পশু রাজশাহী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর