আগামী সপ্তাহে লবণ মাখানো চামড়া কিনবে ট্যানারি মালিকরা
১ জুলাই ২০২৩ ১৯:৩৭
ঢাকা : রাজধানীর পোস্তায় এবার দেড় লাখ পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে এক লাখ পিসের বেশি কাঁচা চামড়া কিনে বিভিন্ন জায়গায় লবণজাত করা হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে আরও ৫০ হাজার পিস কাঁচা চামড়া কেনা হবে। এসব চামড়া বিভিন্ন জায়গা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে পোস্তা, হাজারিবাগ, মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ,নারাযণগঞ্জ, জিনজিরাসহ বিভিন্নস্থোনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। লবণ মাখানোর এক সপ্তাহ পর কা*চা চামড়া বিক্রি করা হয়। সে হিসাবে আগামী সপ্তাহ থেকে এসব লবণমাখা চামড়া ট্যানারিগুলোতে বিক্রি করা হবে।
শনিবার (১ জুলাই) সঙ্গে দুপরে সারাবাংলার আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি আফতাব খান।
তিনি আরও বলেন, ‘অধিক রোদ ও বৃষ্টিতে কাঁচা চামড়া নষ্ট হয়। এবারও তাই হচ্ছে। এবার ঈদের দিন থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ১০ শতাংশ কাঁচা চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রতিবারই রোদ কিংবা বৃষ্টিতে চামড়া নষ্ট হয়। তবে এটি ১০ শতাংশ হলে কোনোরকম টিকে থাকা যাবে। আর ১০ শতাংশের বেশি চামড়া নষ্ট হলে সবাইকে পথে বসতে হবে।’
আফতাব খান বলেন, ‘১৯৩৮ সালে পোস্তায় কাঁচা চামড়ার জন্য আড়তগুলো গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এসব এলাকায় ব্যবসা করা কঠিন। ফলে আমরা খুব সমস্যায় আছি। সাভার ট্যানারির পাশে কাঁচা চামড়া রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমাদের ২১ একক জমি দেওয়ার কথা। ২০০২ সালে সরকারের কাছে আমরা আবেদন করেছি। এসব জমি দেওয়া হলে সেখানে আমরা মানসম্মতভাবে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারব। কারণ বর্তমানে পোস্তায় বড় গাড়ি ঠোকানো খুব কষ্টকর। ফলে এসব স্থানে চামড়া রক্ষণাবেক্ষণ করতে সমস্যা হচ্ছে। এতে করে মূল্যবাস অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা চামড়া কেনাকাটা পল্লী করে দিত ভালো হতো। ২১ একর জমিতে এ পল্লী হলে, যেদিন হবে সেই দিন থেকেই আমরা সুফল পাবো। তখন আমরা আরও চামড়া কিনতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘২০১৪-১৫ সালে পোস্তায় মোট ২০০ বেশি আড়ত ছিল। এখন এটা কমতে কমতে ৬০/৬২টিতে নেমে এসেছে। মানুষ করোনায় ও বৈশ্বিক মন্দায় ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। কেউ কেউ আবার সাভার ট্যানারির পাশে চলে গেছে। তারপরও আমরা এবার ১ লাখ ৫০ হাজার চামড়া কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি। গত বছর আমরা ১ লাখ ৪০ হাজার চামড়া ক্রয় করেছিলাম।’
কাঁচা চামড়া কেমন দামে কিনছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি সাইজের ওপর নির্ভর করে। বর্তমান বাজারে এক লাখ বা তার নিচে দামের গরুর চামড়া ২০ থেকে ২২ বর্গফুট হবে। এই আকারের লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া ৬০০ টাকা। এক লাখের ওপরে দেড় লাখ পর্যন্ত মাঝারি সাইজের গরুর চামড়ার দাম হবে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তবে দুই লাখ বা তার উপরের গরু বড় আকারের চামড়ার দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এর চেয়ে বেশি দামে কিনলে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের লোকসান হবে।’
তিনি বলেন, ‘একটি ৮০০ টাকা দামের চামড়াতে গড়ে ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ মাখাতে হয়। ফলে এতে আরও ২২০ টাকা লবণ বাবদ খরচ হয়। সে সঙ্গে কারিগড় খরচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পরিবহন খরচ ২০ থেকে ৩০ টাকা, লেবার খরচ ওঠানো নামানো ৪০ টাকা। ফলে ৮০০ টাকার চামড়ায় আরও ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খরচ হয় প্রক্রিয়া করতে। এর মধ্যে যদি ১০ শতাংশের নষ্ট হওয়ার মুল্য অ্যাড করা হয় তাহলে খরচ আরও বাড়বে।’
সারাবাংলা/জিএস/একে