নাম-ঠিকানায় আংশিক মিল, একজনের সাজা খাটছেন অন্যজন
৮ জুলাই ২০২৩ ১৬:৪২
বরিশাল: নাম ও ঠিকানায় আংশিক মিল থাকায় একটি ডাকাতি মামলায় সাজা খাটছেন ফিরোজ আলম হাওলাদার (৪৫) নামে একজন। চারমাস ধরে তিনি ফরিদপুর কারাগারে রয়েছেন। ঘটনার প্রকৃত আসামি জুয়েল ওরফে ফিরোজাল পলাতক রয়েছেন। দু’জনেরই বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়।
শনিবার (৮ জুলাই) সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এমন দাবি করেছেন ফিরোজ আলমের পরিবারের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে ফিরোজ আলমের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী ঢাকার আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন হিসেবে নিয়মিত চাকরি করে আসছিলেন। গত ৬ মার্চ শবে বরাতের ছুটিতে ফিরোজ আলম বাড়িতে আসলে ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল র্যাব-৮ এর একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে নলছিটি থানায় হস্তান্তর করলে তাকে ঝালকাঠি জেলহাজতে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীকে ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ তারিখে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার দায়ের করা একটি ডাকাতি মামলায় (মামলা নং-২৬) ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমি ও আমার স্বজনরা ফরিদপুরে গিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে জানতে পারি, ওই মামলার ৫ নম্বর আসামি হিসেবে জুয়েল, বাবা- অজ্ঞাত উল্লেখ আছে। আরও জানতে পারি ইতোপূর্বে ওই মামলার ৫ নম্বর আসামি জুয়েল ওরফে ফিরোজাল ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অন্য আরেকটি মামলায় (মামলা নং-১১) ২০০৩ সালের ১২ জুন গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ফরিদপুর কারাগারে ছিলেন। সেখানে আসামির নাম ফিরোজাল, বাবার নাম- মৃত নুর মোহাম্মদ ওরফে মনু মিয়া, গ্রাম-বৈশাখিয়া, থানা- নলছিটি, জেলা- ঝালকাঠি উল্লেখ আছে। অথচ ২০০৭ সনের মামলায় আমার স্বামীর নাম ও ঠিকানা (মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার, পিতা-নুর মোহাম্মদ, গ্রাম-বৈশাখিয়া, থানা- নলছিটি, জেলা- ঝালকাঠি) কিভাবে এখানে এসেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ২০০৩ সনের সেই ডাকাতি মামলার আসামি ফিরোজাল ৯ মাস জেলহাজতে ছিলেন। তারপর থেকে তিনি পলাতক। আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলায় কারাগারে থাকতো তাহলে তার চাকরি থাকার কথা না। আমার স্বামী নিয়মিত চাকরি করে প্রতিষ্ঠানে হাজির ছিলেন, সেটার তথ্য ও প্রমাণাদি আমাদের কাছে আছে’- বলেন সুরাইয়া বেগম।
তিনি বলেন, ‘নাম ও ঠিকানায় আংশিক মিল পাওয়ায় যথেষ্ট যাচাই-বাছাই ছাড়াই আমার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন সে অপরাধী না হয়েও জেল খাটছেন। আমার পরিবারে ৪টি কন্যা সন্তান আছে। তাদের বাবা জেলে থাকায় তারাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমিও আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই প্রকৃত দোষীকে খুঁজে বের করে আমার স্বামীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ সকাল ১১টার দিকে নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের বৈশাখিয়া বাজার থেকে ফিরোজ আলম হাওলাদারকে গ্রেফতার করে র্যাব-৮ এর সদস্যরা। পরবর্তীতে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
সারাবাংলা/এনএস