আমের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে
৯ জুলাই ২০২৩ ১০:০৭
খাগড়াছড়ি: চলতি বছর আম্রপালি, বারি-৪, রাঙগুই’সহ বিদেশি প্রজাতির মিয়াজাকি, কিউজাই ও রেড আইভরি জাতের আম চাষে সফলতা পেয়েছেন জেলার কৃষকরা। তীব্র দাবদাহ ও খরায় আম্রপালির আকার ছোট হলেও ফলন হয়েছে বাম্পার। কিন্তু এবার পরও হাসি নেই কৃষকদের। কারণ উৎপাদন খরচসহ নানা কারণে আয়-ব্যয় প্রায় সমান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৯৭৬ মেট্টিক টন। এর বিপরীতে ৩ হাজার ৭৩৯ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির আম।
তবে পরিচর্যা ব্যয়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত টোল আদায়কে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। জেলার বড়পিলাক গ্রামের আম বাগানের মালিক আবুল কালাম জানান, তিনি আম চাষে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। আর বিক্রয় করেছেন প্রায় ছয় লাখ টাকা। সার, কীটনাশক ও পরিবহন খরচ যেমন বেশি, তেমনি ট্যাক্স-টোল বেশি হওয়ায় তাদের লাভ হচ্ছে না।
খাগড়াছড়ি ফলদ বাগান মালিক সমবায় সমিতির প্রধান উপদেষ্টা অনিমেষ চাকমা রিংকু বলেন, ‘ফল পরিবহনে সরকারি নির্ধারিত চার্জের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত টোল আদায়ের কারণে খাগড়াছড়ি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বাইরের ব্যবসায়ীরা। ফলে আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।’
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘গত এক দশক ধরে কৃষি অর্থনীতিতে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির অবস্থান চোখে পড়ার মতো। পাহাড়ের উর্বর মাটি ও আবহাওয়া কাজে লাগিয়ে এখানে আবাদ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের আম। খাগড়াছড়ির বিষ মুক্ত সুমিষ্ট আম্রপালির খ্যাতি জেলা ছাড়িয়ে সারাদেশে। এবার আম্রপালি ছাড়াও বিশ্ববিখ্যাত মিয়াজাকি, কাটিমন, কিউজাই ও রেড আইভরির মতো বিদেশি জাতের আমের চাষ হয়েছে এখানে। ফলনও ভালো হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারি আদেশ মোতাবেক ট্যাক্স-টোল নেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ বেশি নিলে আম চাষিরা অভিযোগ করতে পারেন। আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
সারাবাংলা/জেএম/এনএস