Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফের উৎপাদনে রামপালের এক ইউনিট, প্রস্তুত আরেকটি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২৩ ১৬:২২

ঢাকা: কারিগরি ত্রুটির কারণে সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। এটির সংস্কার কাজ চলছে। এই কাজ শেষ করে আগামী সপ্তাহে আবারও বন্ধ ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পাশাপাশি গত ২৮ জুন থেকে যে দ্বিতীয় ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে সেটিও বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্প সুত্রে জানা গেছে, ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু করে গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট। তখন পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করলেও এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন লোডে ইউনিটটির উৎপাদনক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর থেকে প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। তখনি বলা হয়েছিল চলতি বছরের জুন মাসে উৎপাদনে যাবে দ্বিতীয় ইউনিট। সে অনুযায়ী গত ২৮ জুন শুরু হয় দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন। যার এখন ধাপে ধাপে লোড টেস্ট চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ইউনিট এ বছরের সেপ্টেম্বরে বানিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের ডিজিএম আনোয়ারুল আজিম দুইটি ইউনিটের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘প্রথম ইউনিট রক্ষনাবেক্ষন কাজের জন্য সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিগগিরই সেটি উৎপাদন শুরু করবে। আর দ্বিতীয় ইউনিটও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে প্ল্যান্টে কয়লার কোনো সংকট নেই। গত ৭ জুলাই ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ পৌঁছেছে। তা ছাড়া বর্তমানে পাওয়ার প্ল্যান্টে ২০ হাজার টন কয়লা মজুত আছে। শুধু তা-ই নয়, আগামী তিন বছরের জন্য ৮০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের নিশ্চয়তা রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে কয়লা সংকটের কারণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়েক দফা সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। জানা গেছে, সে সংকট কেটে গেছে।

রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি করা হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। যা পর্যায়ক্রমে আসে। বর্তমানে ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু থাকলে প্রতিদিন আট হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হবে।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে সেপ্টেম্বরে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে কয়লা মজুত এবং পাইপলাইনে রয়েছে তাতে আগামী তিন বছরের জন্য জন্য নিশ্চিন্ত থাকা যাবে।

সরকারের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোর একটি রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমির ওপরে কয়লা ভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বিনিয়োগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশ সমঝোতা স্মারকে সই করে।

বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি বিপিডিবি ও এনটিপিসি যৌথ একটি কোম্পানি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড- বিআইএফপিসিএল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মান প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালে। বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিআইএফপিসিএলের তথ্য অনুযায়ী, কাজ শুরুর তারিখ থেকে ৪১ মাসের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার কথা থাকলে করোনার কারনে তা পিছিয়ে যায়। এক বছর পিছিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উৎপাদন শুরুর চিন্তা করা হয়। কিন্তু সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়ার পাশাপাশি কয়লার সংস্থান না হওয়ায় তা আবার পেছানো হয়। বারবার তারিখ পেছানোর পর গেল বছর ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর উৎপাদনে যায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। এলসি জটিলতায় আমদানি ব্যাহত হওয়ায় কয়লা সংকটে ২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে প্রথমবার বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়৷ এরপর কয়লা সংকটে আরো কয়েকবার উৎপাদন বন্ধ হয়।

সারাবাংলা/জেআর/একে

কয়লা সংকট জাতীয় গ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদন রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর