একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম
১০ জুলাই ২০২৩ ১৮:৪৮
মানিকগঞ্জ: একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মানিকগঞ্জের এক গৃহবধূ। নবজাতকদের মধ্যে দুইজন ছেলে, দুইজন মেয়ে। সিজারিয়ানের মাধ্যমে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার শিশু ও তাদের মা রুমানা ইসলাম ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এস এম মনিরুজ্জামান।
রুমানা ইসলাম (২০) মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন ধামধারা গ্রামের গৃহবধূ।
চার সন্তানের পিতা মো. নয়ন শেখ বলেন, ‘মানিকগঞ্জের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারি, আমার স্ত্রীর গর্ভে তিন সন্তান রয়েছে। প্রথমে অবাক হয়ে যাই। এ কথা শোনার পর আমার স্ত্রী ভয় পেতে থাকেন। তাকে সবসময়ই সান্ত্বনা দিয়ে রাখতাম যেন ভয় না পায়। সেই থেকেই মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার হাসিনা বানুর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল। এই হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করার পর তিনজন নয় আমার স্ত্রীর গর্ভে চার সন্তান রয়েছে বলে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান।’
নয়ন বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যার পরপর স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি এবং সেখানে ভর্তি । সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে চার সন্তানের জন্ম হয়। এদের মধ্যে দুইজন মেয়ে এবং দুইজন ছেলে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার চার সন্তান এবং স্ত্রী ভালো আছে।’
মো. নয়ন শেখ বলেন, ‘আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল ছেলে হলে নাম রাখব নুর। দুই ছেলে হয়েছে সেহেতু একজনের নাম নুর রেখেছি। আর আমার ডাক নাম নয়নের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছি মনি। অর্থাৎ আমার ছেলে দুজনের নাম হচ্ছে নুর এবং মনি। বাকি দুই মেয়ের নাম রাখার দায়িত্ব দিয়েছি আমার স্ত্রী রুমানা ইসলামকে।’
সিজারিয়ানের আগে আমার স্ত্রী ভয় পেলেও সন্তানদেন মুখ দেখার পর থেকেই সেই ভীতি কেটে গেছে। একসাথে চার সন্তান পেয়ে সেও আমার মতো খুশি বলেন মো. নয়ন শেখ।
দেশবাসীর কাছে সন্তানদের জন্য দোয়া চেয়েছেন এ দম্পতি।
এদিকে একই সঙ্গে চার নাতি নাতনির খবর শুনে হাসপাতলে ছুটে আসেন রুমানা ইসলামের পিতা বাবুল মোল্লা। তিনি বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান নানা। দোয়া করি, আল্লাহ যেন আমার নাতি নাতনিদের বাঁচিয়ে রাখেন।’
মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপপরিচালক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এই প্রথম সিজেরিয়ানের মাধ্যমে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম হয়েছে। এতে আমরা সবাই খুশি। চার সন্তানের মধ্যে এক ছেলে সন্তান পুরোপুরি সুস্থ থাকায় তার অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে না। বাকি জনের অক্সিজেনের প্রয়োজন হওয়ায় তাদের শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য নবজাতক বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে (স্ক্যানো) রাখা হয়েছে। তবে তিনজনই অক্সিজেন পাচ্ছে। তিন থেকে চার দিন তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’
মুন্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতা সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া চার শিশুর পিতা-মাতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি চার শিশু ও তার মাকে বিশেষ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সারাবাংলা/একে