ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে সারাদেশ: রিজভী
১৩ জুলাই ২০২৩ ১৭:২৩
ঢাকা: ডেঙ্গু জ্বরে সারাদেশ কাঁপছে বলে মন্তব্য করেছেন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বরে সারাদেশ কাঁপছে। প্রতিদিন লাশের সারি দীর্ঘ হলেও এ ব্যাপারে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। অথচ এই রোগ শতকরা একশত ভাগ প্রতিরোধযোগ্য। সরকারের অবহেলা এবং উদাসীনতায় এটি এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। প্রায় সারাদেশেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে একদিনে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ও সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে। মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের বাজেট লুটে খাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।’
তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে ড্রোন এবং ফগার মেশিন দিয়ে ফটোসেশন করা হচ্ছে। মূলত মশক নিধনে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, ডেঙ্গু জ্বর হলে দ্রুত যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেটিও নিতে পারেনি সরকার। শুধুমাত্র দুর্নীতির কারণে দেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙ্গে পড়েছে। আসলে সরকার প্রতিদিন দেশের অসংখ্য মানুষের জানাজা দেখতে ভালবাসে।
রিজভী বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতাসহ বহুমাত্রিক গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং অবৈধ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল পল্টনে স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশকেও বাধাগ্রস্ত করতে সরকার তার স্বভাবসূলভ চণ্ডনীতির কোনো ব্যতিক্রম করেনি। রাস্তায় রাস্তায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাধা, গ্রেফতার, পাড়ায়-মহল্লায় ককটেল বিস্ফোরণসহ সহিংস আক্রমণ কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। নেতাকর্মীদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করাসহ গাবতলী-আমিনবাজার-গাজীপুর-ধামরাই-টঙ্গী-কালিগঞ্জ সড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা, মাওয়া-কেরানীগঞ্জ মহাসড়কে ঢাকার প্রবেশদ্বারে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়।’
‘এসব এলাকা থেকে অসংখ্য যানবাহন আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নেতাকর্মীরা ঢাকায় ঢোকার সময় গ্রেফতার করা হয়। এতে শুধু বিএনপি নেতাকর্মীই নয়, রোগীসহ সাধারণ মানুষও চরম হয়রানীর শিকার হয়। এরপরও জনতার পল্টনমুখী যাত্রাকে প্রতিহত করতে পারেনি সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীদের আক্রান্ত করা হলেও তাদের উদ্যম দমাতে পারেনি অবৈধ সরকারের চ্যালা-চামুন্ডারা। সুকৌশলে বাস, মিনিবাস, গণপরিবহন বন্ধ করেও পল্টনের দিকে ছুটে আসা মানুষকে আটকানো যায়নি’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “শুধু তাই নয়, সমাবেশকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করেই ক্ষান্ত হয়নি, এটির প্রচারে সরকার মারাত্মক হস্তক্ষেপ করেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোটা পল্টন এরিয়ায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, মোবাইল নেটওয়ার্ক’র ফ্রিকোয়েন্সি ছিল না বললেই চলে। টেলিভিশনে সমাবেশের সংবাদ লাইভ প্রচার করতে নিষেধ করা হয়। এরপরেও উত্তাল জনসমুদ্রের মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হলো- দেশের নোটিশবোর্ডে জনগণের পক্ষ থেকে ‘সতর্ক বার্তা’।”
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহীন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম