পার্লামেন্ট বিলুপ্ত: কোন পথে পাকিস্তান
১০ আগস্ট ২০২৩ ১৬:১১
পাকিস্তানে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সুপারিশে পার্লামেন্টে ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। এর মধ্যে দিয়ে দেশটি জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রস্তুত হলো।
সংসদ বিলুপ্তির ফলে দেশটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পর ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ইমরানের খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ একাধিক মামলা হয়। সেই মামলায় সাজা হলে সম্প্রতি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৯০ দিনের মধ্যে হবে জাতীয় নির্বাচন
পাকিস্তানের বিদায়ী সরকারকে নতুন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য তিন দিন এবং সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ৯০ দিন সময় দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। তবে আগামী বছর পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে শেহবাজ শরীফের সরকার।
আরও পড়ুন: ভেঙে দেওয়া হলো পাকিস্তানের পার্লামেন্ট
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, পাকিস্তান সরকার নির্বাচন স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছে। কারণ, বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে দেশটি। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশটি অস্থিতিশীল হওয়ার হুমকিতে রয়েছে।
পাকিস্তানের অস্থিতিশীলতা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সতর্ক করেছে। দেশটির হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা জন কিরবি’র বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘আমরা যেকোনো কর্মকাণ্ড বিশেষ করে সহিংস কর্মকাণ্ডের বিষয়ে উদ্বিগ্ন, যা পাকিস্তানসহ সেসব দেশগুলোতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। যাদের সঙ্গে আমরা সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করি।’
মাঠের বাহিরে ইমরান খান
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সবচেয়ে বেশি আসন পায়। জয় লাভের তিন দিন পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। আবারও সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দেশটির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। যারা ১৯৪৭ সালের পর দেশটিতে অন্তত তিনটি সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইমরান খানের জনপ্রিয়তা ও ক্ষমতাচ্যুত হওয়া— সবকিছুতেই সামরিক বাহিনীর প্রভাব ছিল। এটি তারই ফল। তবে ইমরান খান ভিন্ন কথা বলতেন, তিনি দাবি করেন পাক বাহিনী দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। এমনকি একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে গত বছরের নভেম্বরে তার উপর একটি হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসাবে অভিযুক্ত করেছিলেন তিনি। ওই সময় তাকে পায়ে গুলি করা হয়েছিল।
আগাম নির্বাচনের জন্য বিক্ষোভ এবং সংসদ থেকে পিটিআই দলের আইন প্রণেতাদের পদত্যাগ করা সত্ত্বেও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ইমরানের যুদ্ধ কার্যত ব্যর্থ হয়। ২০০টির অধিক মামলা দিয়ে তাকে বেকায়দায় ফেলা হয়েছে।
ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
[এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন সারাবাংলার নিউজরুম এডিটর নূর সুমন]
সারাবাংলা/এনএস
ইমরান খান পাকিস্তান পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) শেহবাজ শরীফ