ঢাকা: বাজারে যে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তা এখনই কমছে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে বাজারে যে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হবে বা হচ্ছে তা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আমদানি করতে বলা হয়েছে। যে কেউ চাইলে আমদানির অনুমতি পাবেন।
সোমবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজ নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আমরা দুইটি উদ্যোগ নিয়েছি। এরমধ্যে একটি হচ্ছে মিশর, চীন, তুরস্ক থেকে আমদানি বাড়ানো আরেকটি হলো বাজারে মনিটরিং বাড়ানো।
তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বলেছি ভারত যেহেতু পেঁয়াজ রফতানিতে শুল্ক বাড়িয়েছে সেহেতু অন্যান্য দেশগুলো থেকে আমদানি করা যেতে পারে। বাজারে হয়তো পেঁয়াজের দাম বাড়তি থাকবে তবে তা খেঁটে খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাবে না।
তিনি আরও বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের এবং আমদানির দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ও সম্পৃক্ত হয়ে কাজটা করছি। গত বছর চাষিরা পেয়াজের দাম পায়নি। কারণ আমরা দাম বাড়াতে পারিনি,সিন্ডিকেটের কারণে। সিন্ডিকেট ভাঙা অনেক কঠিন। সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কমবে। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে পেঁয়াজ ব্যাপক ব্যবহার হয় সবজির মতো। সব কিছুতেই পেঁয়াজ লাগে। মসলা হিসেবে পেঁয়াজ খাবারে বাড়তি স্বাদ যোগ করে। আমাদের দেশের মাটিতে পেয়াজ ভালো হয়। কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এরই মধ্যে গবেষণা করে উন্নত জাতের পেঁয়াজের উদ্ভাবন করেছে। সমস্যা হলো পেঁয়াজের যখন মূল সিজন অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল। এসময় দাম কমে যায়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল। ঘরে থাকলে ওজন কমে যায়। যদি মজুত কর যেতো তাহলে চাষিরা ভালো দাম পেত। বাজারে দাম বাড়তো না প্রতিবছরই পেঁয়াজ বাড়া নিয়ে বিব্রত হতে হয়। এবারও আড়াই লাখ টন কম উৎপাদন হয়েছে। টার্গেটের চেয়ে অন্তত ২ লাখ টন কম উৎপাদন হয়েছে। সেজন্য আমরা দীর্ঘ মেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা সিজনের বাইরেও কিছু পেঁয়াজ উৎপাদন করতে চাই। এবার ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। যা অক্টোবরে তোলা যাবে। আমরা দেখেছি এসময় পেঁয়াজের ক্রাইসিস দেখা দেয় অক্টোবরেই। পাশাপাশি মাচান করে দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তা করছি।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারতের সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে দাম বেড়েছে। ভারত সফরে গিয়ে আমরা দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছি গমের পাশাপাশি পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও যেন
বাংলাদেশকে সুবিধা দেয়। পেঁয়াজতো তাদের থেকে তো আমরা সামান্য নিচ্ছি। বর্তমান ক্রাইসিস মোকাবেলার জন্য চীন, মিশর, তুরস্কের বাজার দেখতে হবে। আমদানির বিষয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিন্তু আমরাও দায় এড়াতে পারি না। তবে ভারত থেকে আমদানি করলে পেঁয়াজ অনেকটা সস্তায় পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে হবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রণালয়সহ সবাই মিলে চেষ্টা করবো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে। যাতে সকল পর্যায়ের মানুষ কিনে খেতে পারে। যদিও দাম কিছুটা বেশি দিতে হবে।
ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে মূল্যস্ফিতির যুক্তি তুলে ধরেছেন কৃষিমন্ত্রী।