চট্টগ্রাম ব্যুরো: সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা বিমানের যাত্রী এক ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে প্রায় এক কেজি সোনা উদ্ধার হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একই বিমানে ভারতীয় ওই যাত্রীর ঢাকায় যাবার কথা ছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে তল্লাশি করেন বিমানবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা।
সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতীয় ওই নাগরিকের কাছ থেকে স্বর্ণ উদ্ধারের পর তাকে আটক করে হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা যৌথভাবে এ অভিযান চালান।
বিমান থেকে আটক যাত্রী তুষার নাগিনদাস (৩৩) ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলের বাসিন্দা।
বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কাস্টমসের উপ-কমিশনার আহসান উল্লাহ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-১৫২ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানটি শারজাহ থেকে রওনা দিয়ে প্রথমে চট্টগ্রামে অবতরণ করে এবং একই রুটের যাত্রী নিয়ে পরবর্তীতে ঢাকায় যায়।
‘ভারতীয় নাগরিকের ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার কথা ছিল। তার আগেই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনি। তার কাছ থেকে ৪২১ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার এবং ব্যাগে রাখা একটি গেঞ্জির মধ্যে লেপ্টে রাখা আরও ৫৬০ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়। এসব সোনা নিয়ে আসার কোনো ঘোষণা তিনি দেননি। তাকে আটক করে আমরা হেফাজতে রেখেছি।’
আটক যাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে কাস্টমস কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ জানান।
স্বর্ণালঙ্কার নাকি সোনার বার ?
এদিকে সোনা উদ্ধারের এ ঘটনা নিয়ে বিমানবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের একেক ধরনের তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে ‘সালেম’ নামে এক কর্মকর্তা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তথ্য দিয়ে ছয়টি সোনার বার উদ্ধারের বিষয় জানান। একইসঙ্গে তিনি ভারতীয় নাগরিক তুষার নাগিনদাসের পাসপোর্টের ছবিও গ্রুপে দেন।
সালেমের তথ্য অনুযায়ী, সকালে শারজাহ থেকে আসা জি-নাইন ৫২৬ ফ্লাইটের এক যাত্রী কিছু সোনার বার ওয়াশরুমে হাতবদল করবেন বলে তথ্য আসে শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওয়াশরুমের ডাস্টবিন থেকে ছয়টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়।
বিকেলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের হোয়াটস গ্রুপে তথ্য দেওয়া হয়, ৪২১ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার এবং ব্যাগে রাখা একটি গেঞ্জির মধ্যে লেপ্টে রাখা আরও ৫৬০ গ্রাম সোনাসহ ভারতীয় নাগরিক তুষার নাগিনদাসকে আটক করা হয়েছে। বিমানবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছেন বলে তথ্য দেওয়া হয়।
এরপরই মূলত ভারতীয় নাগরিক আটক ও সোনা উদ্ধার নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন উঠেছে, কোন সংস্থার তথ্য সঠিক ? শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ এবং তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা সালেমকে কয়েকদফা কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
কাস্টমসের উপ-কমিশনার আহসান উল্লাহ বিভ্রান্তির বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এবং শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছি। তার কাছ থেকে ৯০০ গ্রামের কিছু বেশি পরিমাণ সোনা উদ্ধার করেছি, তবে কোনো সোনার বার পাওয়া যায়নি। সোনার বারের যে তথ্য শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থা দিয়েছে সেটি তাদের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।’