খন্দকার মোশতাককে শ্রদ্ধা: ঢাবি শিক্ষকের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত বাদ
২৯ আগস্ট ২০২৩ ১২:২৩
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। খন্দকার মোশতাক আহমদকে ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর ফলে তিনি সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।
পরে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, ‘হাইকোর্ট আজ রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। তাই এখন ড. রহমত উল্লাহ একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।’
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ বিষয়ে জারি করা রুল দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন।
বিচারপতি মো. বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
গত বছরের ৮ জুন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহর করা রিটের শুনানি নিয়ে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত বছরের ২০ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ঢাবির সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ঢাবির ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ।
অধ্যাপক রহমত উল্লাহ ঢাবিতে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। নীল দলের প্যানেল থেকে তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ঢাবি প্রশাসন। সেখানে অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জানানোর পর খন্দকার মোশতাকের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেও বক্তব্য দেন তিনি। পরে অলোচনা শেষে সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিক্ষক সমিতির সভাপতির বক্তব্যের বিতর্কিত অংশ এক্সপাঞ্জ করেন।
এরপর ফের ২০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অধ্যাপক রহমত উল্লাহ।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও