Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘টর্চ দিয়ে যারা নির্বাচন খোঁজেন তাদের দৃষ্টি আগে কোথায় ছিল?’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩০ আগস্ট ২০২৩ ২১:৫৫

ঢাকা: জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার আমলে নির্বাচনি প্রহসনের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজ যারা বাংলাদেশে টর্চলাইট দিয়ে নির্বাচন খুঁজছেন তাদের দৃষ্টি আগে কোথায় ছিল? তারা কি অন্ধ ছিলেন? আজ শুনতে হয় আমাদের হাতে নাকি গণতন্ত্রই সুরক্ষিত না? সুরক্ষিত হলো- মিলিটারি ডিক্টেটর, অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী, চুরি লুটপাট করে মানি লল্ডারিংকারীদের হাতে। যাদের জনগণ আনন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছে, নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করেছে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ আমার অবাক লাগে যখন বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি। যাদের জন্মই হয়েছে হত্যা-ক্যূ ও ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। যাদের সৃষ্টিই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে। যাদের যাত্রা শুরু হয়েছে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে, কারচুপি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। তাদের মুখে আর যাই হোক গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কিছু প্রভু আছে। তারা আবার একইসঙ্গে সুর মেলায়। বাংলাদেশে এখন একবার নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে? তো আমার প্রশ্ন সেই সব লোকদের কাছে বা সেই সব দেশের কাছে, যারা শুধু এখন গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায় বাংলাদেশে। যখন জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যা করে মার্শাল ’ল জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল বা যখন এরশাদ মার্শাল ’ল জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল- আমরা যখন আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি; কই তাদের তো সেই চেতনা দেখি নাই? তখন তো তাদের কথা শুনি নাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ নির্বাচন সুষ্ঠু চায়! বেশি দূর যেতে হবে না। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার নির্বাচন তো আমরা দেখেছি। জিয়াউর রহমানের তিন তিনটা নির্বাচন। আর বিএনপির চারটা নির্বাচন। অর্থাৎ হ্যাঁ না ভোট, রাষ্ট্রপতি, তারপর হলো সংসদ নির্বাচন। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি তারপর ১৯৭৯ সালে দিল সংসদ নির্বাচন। আবার ৮১ সালে জিয়ার মৃত্যুর পর যে নির্বাচনটা হয় তখনও বিএনপি ক্ষমতায়। সাত্তার সাহেবকে প্রার্থী করা হয়েছিল সেই নির্বাচনে। এইসব নির্বাচনে কীভাবে কারচুপি করে, ভোট চুরি করে- সেটা তো আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। তখন আজ যারা বাংলাদেশে টর্চলাইট দিয়ে নির্বাচন খুঁজছেন তাদের দৃষ্টি কোথায় ছিল? তারা কি অন্ধ ছিলেন?’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচন আমরা অংশ নিলাম। ৪৮ ঘণ্টা রেজাল্ট দিল না, বন্ধ করে দিল। ৪৮ ঘণ্টা পর রেজাল্ট দিল। তখন তো তাদের সোচ্চার দেখিনি। আমরা তো আন্দোলন করে রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। আজ বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র, যে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ ও আমাদের অনেক সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই তো জীবন দিতে হয়েছে। তারা বুকের রক্ত দিয়ে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক’- স্লোগান দিয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘যারা শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, কৃষকের ভাগ্য কেড়ে নেয়, গুলি করে হত্যা করে। শ্রমিক হত্যা করে, যারা শত শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হত্যা করে, যারা এদেশের গণতন্ত্রকেই কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি- তারা এখন গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী। আর আমাদের কিছু আছে বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে; সেই সকল বুদ্ধিজীবী এদের পক্ষে কথা বলে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আমরা ১৫ আগস্ট যারা আপনজন হারিয়েছি, আমাদের মানবাধিকা কোথায়? আমাদেরও যে মানবাধিকার আছে সেকথা তো তারা ভাবে না? আমরা যে বিচায় পাইনি; এই বিচারের জন্য ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ৩৫ বছর পরে মা-বাবা-ভাই হত্যার বিচার পেয়েছি। আমাদের কি বিচার পাওয়ার অধিকার ছিল না? আমরা কি এদেশের নাগরিক না?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার যে কত যন্ত্রণা সহ্য করে চলতে হয়েছে, কীভাবে জীবন কেটেছে। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে আমার বাচ্চাও তখন ছোট। মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে মাঠে নেমেছি একটা চিন্তা থেকে। যে জাতির জন্য আমার বাবা জীবনটা দিয়ে গেছেন, আমার মা জীবন দিয়ে গেছেন, আমার ভাইয়েরা জীবন দিয়েছে- সেই জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, এই স্বাধীনতা কোনো মতেই ব্যর্থ হতে না পারে।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। বক্তব্য দেন- মহানগর উত্তরের সহসভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সহসভাপতি সাদেক খান, আব্দুল কাদের খান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনাম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন নেসা মেরী।

এছাড়াও বক্তৃতা করেন- মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, সহসভাপতি মিজবাউর রহমান ভূঁইয়া রতন, দিলীপ কুমায় রায়, বেগম সাজেদা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, গোলাম সারওয়ার কবীর। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং শেখ ফজলে নূর তাপস।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আওয়ামী লীগ টপ নিউজ টর্চ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

এখনো সালমানকে মিস করেন মৌসুমী
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩

সালমান শাহ্‌কে হারানোর ২৮ বছর
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৪

সম্পর্কিত খবর