তীব্র ভাঙনের কবলে মোংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেলপাড়ের মানুষ
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৬
বাগেরহাট: বঙ্গবন্ধু-মোংলা ঘষিয়াখালী ক্যানেলের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। রামপাল সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশ দিয়ে বগুড়া ব্রিজ পর্যন্ত ভাঙনের ফলে বসতবাড়ি, কৃষিজমি, গাছপালাসহ সেমিপাকা রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানা গেছে, মোংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেল খননের পরপরই রামপালের বেশ কিছু এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়। এর মধ্যে রামপাল সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশ দিয়ে ওড়াবুনিয়া হয়ে বগুড়া নদীর মোহনা পর্যন্ত তীব্র নদী ভাঙন দেখা দেয়।এছাড়া বগুড়া নদীর উত্তর হুড়কার চলাচলের একমাত্র রাস্তার বেশ কিছু অংশ ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
কাঁকড়াবুনিয়ার একমাত্র চলাচলের রাস্তার প্রায় আধা কিলোমিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। দাউদখালী নদীর ঝনঝনিয়া, ফয়লাহাটের আবাসন এলাকা, শ্রীফলতলা, বড়দিয়া-ইসলামাবাদ সড়কের বেশ কিছু অংশ, পশ্চিম রোমজাইপুর, রোমজাইপুর পূর্ব পাড়া, ডাকরা, রামপাল সদর খেয়াঘাটের দুইপারে তীব্র নদী ভাঙন দেখে দিয়েছে।
মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলসহ দাউদখালী ও বগুড়া নদীর প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার জুড়ে এমন ভাঙনে ফয়লাহাটের যৌখালী ব্রিজের দু’পাশে তীব্র ভাঙন দেখা দেওয়ায় ব্রিজটিও হুমকিতে পড়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফসলি জমি, গাছপালা, পাকা ও আধাপাকা রাস্তাসহ প্রায় শতাধিক একর ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিও নদী গ্রাস করে নিয়েছে।
বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ড রামপালের ফয়লা বাজার, ঝনঝনিয়া বাজার ও রামপাল সরকারি কলেজের সামনের কিছু স্থানে গত বছর জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধের চেষ্টা করা হয়ছিল। তবে অন্যসব জায়গায় ভাঙন অব্যাহত থাকায় জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘আমাদের খবর কেউ নেয় না, আমরা পরিবার-পরিজন ও শিশুদের নিয়ে চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছি। রাত হলে নদী ভাঙনের শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। দুঃশ্চিন্তায় ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কোথাও প্রতিকার মিলছে না।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিবুল আলমের বলেন, ‘রামপালের বেশ কিছু এলাকায় বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ভাঙন রোধে আশু ব্যাবস্থা নেবো।’
রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমরা বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্হা নেয়নি। মন্ত্রীর ডিও লেটার রেডি আছে, তবু তারা এখনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহর বলেন, ‘আমি ভাঙনকবলিত বেশ কিছু স্থান পরিদর্শন করেছি। ৩/৪টি স্পটে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মন্ত্রীর ডিও লেটারসহ চিঠি পাঠালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্হা নিতে পারবো।’
সারাবাংলা/এমও