ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পাচ্ছে নতুন একাডেমিক ভবন
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪৮
ঢাকা: ছয় তলা ভবন পাচ্ছে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এজন্য ‘ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ১১ তলা ভিতবিশিষ্ট ৬ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
অনুমোদন পেলে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুনে বাস্তবায়ন করবে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। প্রস্তাবটি নিয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির পিইসি সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কারিগরি শিক্ষা একটি দেশের প্রধান হাতিয়ার। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষার প্রসার ও মানবৃদ্ধির জন্য শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করে সবার জন্য শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি ও মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ, কম্পিউটার শিক্ষা প্রবর্তন এবং কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধি করে চলেছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২০২৫) এবং এসডিজি (২০১৬-২০৩০) এর লক্ষ্যমাত্র অর্জনে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষার এনরোলমেন্ট ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য সার্বিক কার্যক্রম নিয়েছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ১৯৫৫ সালে সর্বপ্রথম ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তিন বছর মেয়াদে চারটি টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে। পরবর্তীতে দেশে মোট ৫০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করা হয়েছে। আরও ২৩টি নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের কার্যক্রম চলমান আছে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে বর্তমানে স্থাপত্য, অটোমোবাইল, সিভিল, কম্পিউটার, ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, ফুড, কেমিক্যাল, এনভায়রনমেন্টাল, এয়ারকন্ডিশন ও পাওয়া টেকনোলজিসহ মোট ১২টি টেকনোলজিতে প্রায় ১০ হাজার ৮০০ জন শিক্ষার্থী ১০৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে অধ্যয়নরত।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ক্লাস ও ল্যাব মিলে মোট কক্ষের সংখ্যা মাত্র ৭৬টি, যার মধ্যে ২০টি থিউরি বা তাত্ত্বিক ক্লাস নেওয়ার উপযোগী। অবশিষ্টগুলো ল্যাবগুলোকে বিভক্ত করে শিক্ষকদের কক্ষ বাদ দিয়ে ৫৬টি ক্লাস রুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে আরও ৩২টি ক্লাসরুম কম থাকায় বাকি ৩২টি গ্রুপের ক্লাস যথাসময়ে শুরু করা সম্ভব হয় না। এতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা উন্নত পরিবেশে মানসম্মত কারিগরি শিক্ষার লাভের সুযোগ পাবে। প্রকল্পের আওতায় ১১তলা ভিতে ৬ তলা ৭ হাজার ৯৯৫ বর্গমিটার একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য ৩৭ কোটি ১৪ লাখ ৫২ হাজার টাকার প্রস্তাব করার যৌক্তিকতা এবং প্রতিষ্ঠানটিতে বিদ্যমান ভবনের সংখ্যা, শিক্ষার্থী ধারণক্ষমতা সম্পর্কে সভায় আলোচনা করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক অঙ্গে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ৪৫টি শিক্ষা ও শিখর উপকরণে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং ৫টি অফিস সরঞ্জাম কিনতে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকা অনুসারে নন-সিডিউলভুক্ত আইটেম মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার দর যাচাই কমিটি গঠন করে বাজার দর নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে এ বিধান অনুসরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে সভায় প্রশ্ন তোলা হবে।
এছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজের অধীন ইন্টারনাল ইলেকট্রিফিকেশন খাতে ১ কোটি ৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হলেও বিস্তারিত বিভাজন দেওয়া হয়নি। ফিজিক্যাল কন্টিজেন্সি ও প্রাইস কন্টিজেন্সি খাতে ৮৭ লাখ ৯ হাজার টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। উভয় খাতে অর্থের পরিমাণ পৃথকভাবে না থাকা নিয়ে সভায় আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও