‘বিশ্ব নেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে চরম মূল্য দিতে হবে’
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৩৩
ঢাকা: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার চলছে। আমাদের এ প্রসঙ্গে কথা নেই। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টন, বান কি মুন সহ বিশ্ববরেণ্য ১৭৫ জন নেতা এর মধ্যে ১০৪ জন নোবেল বিজয়ী বিবৃতি দিয়েছেন ড. ইউনুসের পক্ষে। বিশ্ব বরেণ্য এত নেতা একটি বিষয়ে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন, এটি আমার জানা নেই। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের বক্তব্যে, বিচার বিভাগীয় হয়রানির অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাদের বিচার-বুদ্ধি বা সততা সম্পর্কে কোন সন্দেহ বা কটাক্ষ করা হাস্যকর। তারা বিচার বিভাগীয় হয়রানির কথা বলেছেন, এটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববরেণ্য নেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। বিশ্ব সমাজে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে। এ জন্য হয়তো, জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা যদি মনে করি, উটপাখির মতো মাথা গুঁজে বালুতে কিছু লুকিয়েছি, আমি কাউকে দেখিনি তাই কেউ আমাকেও দেখছে না। উট পাখির মত মনে করলে চলবে না, সবাই আমাদের দেখছেন।’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক টাইম পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে, নীরবে ধ্বংস করা হচ্ছে একটি দেশের গণতন্ত্র, কাঠগড়ায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনেও বিচারিক হয়রানির কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে গণতন্ত্রহীনতার কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে বিশ্বের এক নম্বর গণমাধ্যম বলা হয়ে থাকে। তাদের যে কোনো প্রতিবেদন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য। দেশের মানুষ, সরকার ও বিরোধীদলের সঙ্গে কথা বলে নিউইয়র্ক টাইমস এই প্রতিবেদনটি করেছে। সারাবিশ্ব যে পত্রিকাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে, আমরা তাকে মূল্য না দিলে তাতেও আমাদের খেসারত দিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। এটাকে গুরুত্ব দেয়া জরুরি, না হলে জাতি হিসেবে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সরকার নির্বাচনের আগে বড় বড় পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদে প্রচুর পদোন্নতি দিয়েছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে, গণমাধ্যম বলছে, সরকার একটি শ্রেণিকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। তাদের কোন কাজ নেই, নিজেদের কাজই করবে তারা। দেশে এমনিতেই অর্থের অভাব, সরকার যে রাজস্ব আদায় করছে তাতে হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতো পদোন্নতিতে সার্ভিস আরো খারাপ হবে। লোকজন বেশি হওয়ায় কাজ আরো খারাপ হবে। সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে জিততে হবে। সরকার পদোন্নতি দিয়ে জনগণের পয়সায় নির্বাচন প্রভাবিত করতে চায়।’
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতি’র সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর আশু রোগ মুক্তি কামনায় দোয় ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর, খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে