‘সের্গেই লাভরভের বক্তব্যে স্পষ্ট যে বাংলাদেশ ব্যবহার হতে চলছে’
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:২২
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে একটা কথা খুব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, বাংলাদেশ বহিঃশক্তিগুলোর ক্ষমতা লড়াইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার হতে চলেছে এবং এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আওয়ামী লীগ।’
শুক্রবার (৮ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে ফকিরেরপুল মোড় ঘুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালিতে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসসহ সংগঠনটির কয়েক হাজারও সদস্য অংশ নেন। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গৃহবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে আছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। সারা দেশে মুক্তিকামী, গণতন্ত্রকামী মানুষদের মিথ্যা মামলা দিয়ে, গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আজ এই আওয়ামী লীগের সরকার, শেখ হাসিরার সরকার যারা নির্বাচিত নয়, তারা তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার জন্য গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, যেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, তারা (সরকার) অবিবেচকের মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা-বার্তা বলে বাংলাদেশকে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সামনে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। নির্বাচন আমরা চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা চাই সবাই যেন ভোট দিতে পারে, ভোট দিয়ে মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে পারে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই দুইটি নির্বাচন হয়েছে, একটি নির্বাচনেও জনগণকে ভোট দিতে দেয়নি। এই জন্য আমরা পরিষ্কার করে বলেছি যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা বলেছি যে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এবং সেটার জন্য তাদের পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আজকে জিনিস-পত্রের দাম, তেল-লবণ-পেঁয়াজ-ওষুধের দাম এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, নারীরা হিমশিম খাচ্ছে সংসার চালাতে গিয়ে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে, জ্বালানির দাম বেড়েছে, ওষুধের দাম বেড়েছে। আবার এই যে ডেঙ্গু একটা মহামারি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। কারণ, তারা তো জনগণের সেবা করতে আসেনি, লুটপাট করতে এসেছে। এমনকি সিটি করপোরেশনের মেয়ররা যে ওষুধ আনল, সেখানেও তো তারা চুরি করল।’
সুতরাং মহিলা দলের এই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শপথ নিতে হবে, যেকোনো মূল্যে এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং একটা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাই। আমরা কোনো সংঘাত চাই না, দেশে অবাধ-নিরপেক্ষ একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আপনারা সামনে এগিয়ে আসুন, মানুষ এগিয়ে আসছে। এ সরকারের পতন অনিবার্য- বলেন মির্জা ফখরুল।
সারাবাংলা/এজেড/এমও