Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফিড ও মুরগির বাচ্চা আমদানি করলে কমবে ডিমের দাম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৫৭

ঢাকা: বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ফলে ডিম আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। বরং ডিমের পরিবর্তে পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চা আমদানি করা হলে ডিমের দাম কমে যাবে। কিন্তু দেশের করপোরেট খামারিরা বয়লার ও লেয়ার মুরগির বাচ্চা এবং পোলট্রি ফিডের দাম বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ডিমের দাম বেড়েছে। করপোরেট খামারিদের এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পাড়লে ডিমের দাম কমানো সম্ভব না।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে বিপিএ’র উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি এসব কথা বলেন।

সুমন হাওলার আরও বলেন, ‘মুরগির ডিম বাড়ার অন্যতম কারণ হলো বয়লার ও লেয়ারের বাচ্চা গত এক ১/২ মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। একইসঙ্গে বেড়েছে পোলট্রি ফিডের দাম। গত এক মাস আগে যে বয়লার বাচ্চার দাম ৩৫ টাকা ছিল, সেটা এখন ৫২ এবং লেয়ার মুরগির বাচ্চার দাম দুই মাস আগে ছিল ৩৫ টকা থাকলেও বর্তমানে সেটা ৫৭ টাকা প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করে দিয়েছে। ফলে মুরগির বাচ্চার দাম এক মাসের ব্যবধানে যদি প্রায় দ্বিগুণ হয়, তাহলে তো মুরগির ডিমের দাম কিছুটা বাড়বে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপে বর্তমানে বাংলাদেশ ডিম ও মুরগি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিদিন সকল প্রকার ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস উৎপাদন আছে ৫ কোটি পিস। ফলে ডিম আমদানি নয় বরং ডিম ও মুরগি রফতানি করার সময় হয়েছে আমাদের। পোলট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত আছে ৫০-৬০ লাখ উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য ডিম আমদানি বন্ধ করতে হবে এবং প্রান্তিক খামারিদের লসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। দেশের বাজারে ডিমের দাম বেশি কেন তা তদারকি করে পোলট্রি ফিল্ড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমিয়ে ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ কমিয়ে দাম কমানো সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতের বাজারে ডিম মুরগির দাম কম। কারণ ভারতে ৫০ কেজির ১ বস্তা ব্রয়লার ফিডের মূল্য বাংলা টাকায় ২ হাজার ৭০০ টাকা। এক বস্তা লেয়ার ফিডের মূল্য ১ হাজার ৮৭৫ টাকা, ১টি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার মূল্য ২৮ টাকা, ১টি লেয়ার বাচ্চার মূল্য ২৫-৩০ টাকা। তাই সেখানে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ বাংলা টাকায় ৫-৬ টাকা। তাদের বাজারে একটি ডিম বিক্রয় হয় ৭ টাকা থেকে সাড়ে ৭ টাকা। এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১১০-১২০ টাকা বিক্রয় করেন ১৫০-১৬০ টাকায়। তাদের উৎপাদন খরচ কম তাই তারা কম দামে বিক্রয় করেও লাভ করতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের বাজারে ১ বস্তা ব্রয়লার ফিডের দাম ৩ হাজার ৫০০ টাকা, ৫০ কেজি ১ বস্তা লেয়ার ফিডের মূল্য ২ হাজার ৯০০ টাকা, ১টি ব্রয়লার বাজার মূল্য ৫০ থেকে ৬০ টাকা, একটি লেয়ার বাচ্চার মূল্য ৭০-৭৫ টাকা, বাংলাদেশে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ, সাড়ে ১০ টাকা থেকে ১১ টাকা। বাচ্চার দাম ৩৫ টাকা ধরে ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৬৭ টাকা বাচ্চার দাম বেড়ে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ ডাবল কেন? সরকারকে তদারকি করে তার সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে।

পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম কমানো না গেলে কখনোই ডিম মুরগির নাম কমবে না। আমদানি করে ডিম-মুরগির দাম কমাতে চাইলে দেশিও শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আমদানি নির্ভর হতে হবে। পরবর্তীতে ঠিকই বেশি দামে কিনে যেতে হবে অথবা টাকা থাকলেও ডিম ও মুরগি পাওয়া যাবে না। তাই আমদানি বন্ধ করে দেশীয় উৎপাদনকে কিভাবে ধরে রাখা যায় সেই চেষ্টা করতে হবে এবং প্রান্তিক খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে উৎপাদনে ফিরেয়ে আনতে হবে বলে ওই লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি বাগ্লি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, জাতীয় যুব পুরষ্কার প্রাপ্ত খামারি মো. জাকির হোসেন এবং সকল জেলা-উপজেলা থেকে প্রান্তিক ডিলার-খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জিএস/এনএস

ডিমের দাম বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর