‘দুষ্ট ছেলে ইসরাইলকে থামান, আমরা গণতন্ত্রটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই’
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:২১
ঢাকা: আমেরিকার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে, আমাদের ইলেকশন নিয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছেন? পারেন না, দুষ্ট ছেলে ইসরাইলকে থামাতে। নিজের দেশে আইন মানে না। জো বাউডেন সাহেব বারবার বলে নেতানিহুয়া কি পাত্তা দেয়? বড় বড় সংকট ঠিক করেন, যুদ্ধ থামান। আমরা অতো বড় হতে চাই না। আমাদের পরাশক্তি হওয়ার কোনো খায়েশ নেই। আমরা গণতন্ত্রটা বাঁচিয়ে রেখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনকালীন মন্ত্রীসভা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময় মন্ত্রীসভা ছোট কি বড় হবে, এটা ঠিক করবে প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে মন্ত্রীসভা ছোটও করতে পারেন অথবা এ রকমও রাখতে পারেন। সেটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এখানে আমাদের কারো কিছু করার নেই। তবে সময়ের কার্যক্রমের কথা বলেছেন, কার্যক্রম হবে রুটিনওয়ার্ক।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর সব অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো ইনকামবেশন সরকার রুটিনওয়ার্ক করবে। মেজর কোনো পলিসি ডিসিশনে অংশ নেবে না। অ্যাপ্রুভ করবে না, এটাই হলো নিয়ম। এই নিয়ম মেনে আমরাও চলব।’
‘এক তত্ত্বাবধায়ক ছিল বাংলাদেশে ক্ষমতায় বসে ১৩ জন সচিবের চাকরি শেষ। সঙ্গে সঙ্গে সাইকেল ফেডারেশনও বিলুপ্ত। আমি বুঝি না সাইকেল ফেডারেশনের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইলেকশন ফেয়ার করার কি সম্পর্ক?’, সে প্রশ্নও তোলেন ওবায়দুল কাদের।
এই ধরনের উদ্ভট কতকিছু বাংলাদেশে হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের একটা নিয়ম আছে। আমরা আমাদের নিয়মে চলব। ইলেকশনে যারা বাধা দেয় তাতে যা খুশি তাই করেন। ওই হুমকি আমাদের দেখিয়ে লাভ নেই। কারণ আমরা ইলেকশন করার জন্যই এসব করছি। আমাদের সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে আপাতত আমরা সামনের নির্বাচনটা ফেয়ার করব, ফ্রি করব, অবাধ করব; এটাই হলো আমাদের আপাতত লক্ষ্য। এর বাইরে কোনো চিন্তা আমরা এই মূহুর্তে করছি না। আমাদের পরিষ্কার কথা, ইনটোটো সংবিধানকে ফলো করে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করব। দুনিয়ার অন্যান্য গণতন্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় আমাদের দেশেও ব্যতিক্রম কিছু হবে না।’
নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কে এল কে এল না? এটা আমাদের বিষয় নয়। নির্বাচন আমরা চাপিয়ে দিচ্ছি না। কারা আসবে, কারা আসবে না সেটা তো আমাদের ব্যাপার কে কারো নিষেধাজ্ঞা দিলো ওইটা আমাদের বিষয় নয়। নিষেধাজ্ঞা তো আমাদের বিষয় নয়? কারণ আমরা তো ইলেকশন করব। বাধা দেব না বাধা যারা দেবে তারাই তো নিষেধাজ্ঞা পাবে। যারা বাঁধা দিবে তাদেরকে ধরুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক একদিন এক হুমকি আসে? আরে কি আজব কারবার? সারা দুনিয়াটা উল্টে পাল্টে সব গেল? ইউক্রেন যুদ্ধ কোথায় নিয়ে গেল? পৃথিবীটা তোলপাড় হচ্ছে। সুদান দুই ভাগ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনে প্রতিদিন নারী শিশুর রক্তস্রোত। মিয়ানমারে কি হচ্ছে ? আমাদের প্রতিবেশী দেশে। রোহিঙ্গাদের চাপিয়ে দিলেন, মানবতার জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেন কিন্তু এখন যে আমাদের সাহায্য কমে যাচ্ছে। এই রোহিঙ্গাদের আমরা খাওয়াবো কিভাবে?’
রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশি সাহায্য কমে গেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন ১২ থেকে ৮ ডলারে চলে আসছে? আমরা কিভাবে চালাব এদের? কিভাবে চলবে এরা? আমরা আমাদের এসব নিয়ে আজকে ভাবছি।’
আফ্রিকার দেশগুলোতে সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এই গণতন্ত্র আমরা মানি না। এই গণতন্ত্রের যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন তাদেরকে বলব, এই দেশ ভেনিজুয়েলা নয়। তাদেরকে বলব, আমার রক্ত দেশ রক্ত দিয়ে এই স্বাধীন করেছি। আমার দেশ ভেনিজুয়েলা নয়।’
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
সভায় উপস্থিত ইশতেহার কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. বজলুল হক খন্দকার, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. শামসুল আলম, ডা. দীপু মনি, শ ম রেজাউল করিম, শেখর দত্ত, ড. মাকসুদ কামাল, সাজ্জাদুল হাসান, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ওয়াসিকা আয়েশা খান, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জুনায়েদ আহমেদ পলক, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সায়েম খান, সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ