সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও মিলছে না ডিম-আলু-পেঁয়াজ
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৯
ঢাকা: সরকার নির্ধারিত দামে বাজারের কোথাও মিলছে না ডিম, আলু ও পেঁয়াজ। পাইকারি বাজারেই এসব পণ্যের কোনো কোনটি সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেশি দামে কেনা থাকলে কম দামে বিক্রি করবো কীভাবে, এসব তো আর রেশনের পণ্য নয়!
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আলু ৫০ টাকা কেজি, দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি ও ডিম ৫০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজার ও মহাখালীর বউবাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর মহাখালীর বউবাজারে আলু ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারের ‘ভাই ভাই স্টোরে’র মালিক আব্দুর রহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখনও ৫০ টাকা কেজিতেই আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩৬ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজার থেকেই আমাদের আজ আলু কিনতে হয়েছে ৪২ টাকা কেজিতে। বেশি দামে কিনে কম দামে তো আর বিক্রি করতে পারবো না।’
পেঁয়াজ প্রসঙ্গে এই বিক্রেতা বলেন, ‘সরকার পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। কারওরান বাজার থেকেই আজ দেশি পেঁয়াজ ৮৩ টাকা কেজিতে কিনতে হয়েছে, বিক্রি করছি ৯০ টাকা কেজিতে। ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ৬৬ টাকা কেজিতে, বিক্রি করছি ৭০ টাকা কেজিতে।’
ডিমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ টাকা, আমাদেরই প্রতি পিস ১২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বিক্রি করছি ১২ টাকা ৩০ পয়সা। মানে ৫০ টাকা হালি ও ১৪৫ টাকা ডজনে বিক্রি করছি।’
কোনো পণ্যেরই দাম না কমার প্রসঙ্গে আব্দুর রহিম নামের এই দোকানি বলেন, ‘সরকার নানা অভিযান বা দাম নির্ধারণ করে দিলেও পাইকারিতেই দাম কমছে না। চাপ দিলেও তারা দাম কমাচ্ছে না। খুচরায় তাহলে দাম কমবে কিভাবে?’
কারওয়ান বাজার আড়তে দেখা গেছে, ৭৫ থেকে ৮৩ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন আড়তে পেঁয়াজের মূল্য সাইনবোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কোনো কোনো আড়তে বাজারদরের সাইনবোর্ড দৃশ্যমান নয়।
পেঁয়াজের আড়তদার রাশেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মানিকগঞ্জ থেকে পেঁয়াজ কিনে এনেছি। পাইকারিতে বিক্রি করছি ৭৫ টাকা কেজি। আমরা ৬৫ টাকাতে কিনতেও পারিনি। এই দামে বিক্রি করবো কিভাবে?’
সরকার নির্ধারিত দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানিকগঞ্জেই দাম ৬৫ টাকার উপরে রয়েছে। সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও সেখানে পেঁয়াজের দাম কমেনি বরং এখন পেঁয়াজ বিক্রি করত গিয়ে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।’
আব্দুস সালাম নামের পেঁয়াজের আরেক আড়তদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকার ৬৫ টাকা রেট দিলো? এটা কি সরকারের ফান্ডের জিনিস? সরকার কি একটা কামলার রেট দিতে পারবে? সরকার দিলে হবে না, কৃষকের কাছে অল্প অল্প আছে। কৃষক যদি না বিক্রি করে তাহলে আরও দাম বেড়ে যাবে। এটা রেশন না! ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা। তাহলে দেশি পেঁয়াজ কিভাবে ৬৫ টাকায় বিক্রি করবো। ভোক্তা অধিদফতর এলে আমাদের কেনা দামের রশিদ দেখে চলে যায়। এই আড়তে ৮২ থেকে ৮৩ টাকা কেজিতে পাবনার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।’
এদিকে, কাপ্তান বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ডিমের ডজন ১৬০ টাকা।
আরও পড়ুন:
প্রতি পিস ডিম ১২, আলু ৩৬ ও পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা নির্ধারণ
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও
আলু আলু-পেঁয়াজ ডিম ডিম-আলু-পেঁয়াজ পেঁয়াজ সরকার নির্ধারিত দাম