জণগণ রাস্তায় নামলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে: দুদু
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪০
ঢাকা: বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘বিপদ ধেয়ে আসছে। আমার ৫০ বছর রাজনৈতিক জীবনে এমন সংকটময় দেশ দেখেনি। একবার যদি আগুনে লেগে যায়, জনগণ রাস্তায় নেমে গেলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পুলিশ তার থানা ছেড়ে পালাতে পারে। প্রশাসনের লোকজন ঘর, অফিস ছেড়ে পালাতে পারে।’
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই সরকারকে বলতে চাচ্ছি, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) শেষের দিকে চলে এসেছেন। গত ১৫ বছর ধরে তিনি খারাপ কাজ করেছেন, কিন্তু যাওয়ার সময় একটু ভালো কাজ করলে মানুষ হইতো মাইর একটু কমিয়ে দিতে পারে। জনগণের দাবির অনুকূলে যদি আপনি পরাজয় স্বীকার করেন, এটাই ভালো হবে। খালেদা জিয়া তা দেখিয়ে গিয়েছেন। আন্দোলনের সময় কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আইন পাশ করে ক্ষমতা ছেড়েছেন। সুতারাং গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটা একটি গৌরবময় ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) তার পথ অনুসরণ করতে পারেন। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যেসব কাজগুলো করেছেন সেগুলোর দায় স্বীকার করেন। কেয়ারটেকার বাতিল করেছেন পার্লামেন্টের দাঁড়িয়ে এটাও বলতে পারেন ঠিক হয়নি। ভালোর উদ্দেশ্য করেছিলাম, তবে ঠিক হয়নি। পার্লামেন্টে আমি ভুলের সংযোজন করছি- এ কারণে আপনি জনগণের অনেক কিছু থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আরেকটি কাজ করতে পারেন, আপনি সরাসরি স্টেট থেকে খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে ভুল স্বীকার করে সরি বলতে পারেন। এটা গণতন্ত্রে কোনো লজ্জার বিষয় নয়। আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে না। বললেই হবে, যা হওয়ার হয়েছে সরি। এখন আসেন কিভাবে জাতি, সমাজ, দেশ রক্ষা করা যায় একসঙ্গে কাজ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ক্ষমতাবান মনে করছেন তাদেরও চেহারা পরিবর্তন হতে পারে বাঁচার জন্য। ভয়ংকর অবস্থা, কোনো দেশেকে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত অনিরাপদ মনে করেছে এমনটা কি দেখেছেন? এমনি কি শুনেছেন? আমিরেকান রাষ্ট্রদূত তিনি তার সঙ্গীরা অনিরাপদবোধ মনে করছেন। সম্প্রতি আমেরিকানরা সকল দূতাবাসকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান তত্ত্বাবাধায়ক সরকার। যেটি ৯১, ৯৬ এ মীমাংসা হয়েছে। আপনি সেখান থেকে সরে গেছেন। আমি এখানে স্পষ্ট করতে চাচ্চি, আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা সংবিধান না। সংবিধান আছে কেয়ারটেকার সরকারের মধ্যে।’
দুদু বলেন, ‘এই যে অক্টোবর। সবাই তো অক্টোবরের কথা বলছে, আপনি বুঝতে পারছেন না। এই মাসে একদিন/দু’দিন আছে। তারপর অক্টোবরে মহাসমুদ্র। এই সমুদ্রের মধ্যে পড়লে আপনি হারিয়ে যাবেন, হাবুডুবু খাবেন। সে জন্য সময় থাকতে কেয়ারটেকার মেনে নেন। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন, তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেন। সবাই মিলে কেয়ারটেকার অধীনে নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক সংকট কাঁটার দ্বিতীয় কোনো পথ নেই।’
দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে শারীরিক মুক্তি না, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি, জণগণের মুক্তি। আজকে এই আন্দোলন জনগণের মুক্তির আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আপনাদের আমাদের দিকে তাকানোর সময় নেই। আপনাদের ব্যক্তিগত দিকে তাকান। সব জায়গায় ব্যাপক সংঘর্ষ সৃষ্টি হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে থেকে বিচারপতিরা বিচারকলীগ তৈরি করেছেন। প্রতিমাসে মামলার তারিখ দিচ্ছেন। রাতের বেলায় আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার যদি ৪০ বছর পরে হয়, তাদেরও দুর্নীতি বিচার হবে না কে বলেছে? তাদের বিচার হবে নিশ্চয়ই।’
শীর্ষক আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন— চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ জাতীয়বাদী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোলাম সরোয়ার সরকার ও জাতীয়বাদী সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলাল মাহমুদসহ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এআই/এনএস