ঢাকা: নিরাপদ সড়কের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করার দাবি জানিয়েছেন, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ করেছে। এই আইনে কিছু কার্যকর দিক থাকলেও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে প্রচুর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতি এবং ব্যর্থতা।’
রোববার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এসব কথা বলেন। এসময় নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন খান নান্টু, মুনজুলি কাজী, সাংগঠনিক সমম্পাদক এস এম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে কর্তৃপক্ষ বলে থাকেন, ‘আল্লার মাল আল্লা নিয়ে গেছে’। আমি পবিত্র কোরান শরিফ ভালোভাবে অর্থসহ পড়েছি। কোথাও লেখা নেই আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়েছে। আল্লাহ বলেছেন, জনগণকে সচেতন থাকতে এবং সচেতনভাবে কর্ম করতে। অথচ ‘আল্লাহর মাল আল্লা নিয়েছে’ বলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে দোষারোপ করা হয়। এমনকি এই কথাটি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলা হয়।”
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘৩০ বছর ধরে নিরাপদ সড়ক চেয়ে আন্দোলন করে আসছি। এজন্য অনেক কর্মশালাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করেছি, শ্রম দিয়েছি। কিন্তু আমার আশা এবং স্বপ্নপূরণ হয়নি। এক কথায় আমি সন্তুষ্ট নই। কারণ সরকার নিরাপদ সড়কের জন্য যেসব আইন করেছে তার মধ্যে অনেক কিছুই অনুপস্থিত।’
সড়ক দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বহুমাত্রিক হওয়ায় সরকারের একার পক্ষে তা নিরসন করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এর জন্য প্রয়োজনীয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সড়ক দুর্ঘটনার আচরণগত পাঁচটি মূল ঝুঁকি যেমন অতিরিক্ত গতি, স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট ও সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসনের অনুপস্থিতি বিবেচনায় রেখে সার্বিকভাবে সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আলোকে যথাযথ আইন ও বিধিমালা বাস্তবায়িত হলে সড়ক নিরাপদ হয়ে উঠবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘২০১৯ সালে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করে সড়ক পরিবহন আইনের কার্যকর প্রয়োগের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবারেও তিনি জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে আর্থিক সহায়তা দেবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয় ২২ অক্টোবর ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ এর স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ বছর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘আইন মেনে সড়কে চলি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’