পি কে হালদারের ২২ বছর কারাদণ্ড
৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২৪
ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের ও অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) পৃথক দুই ধারায় ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর ১৩ আসামির প্রত্যেকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
পি কে হালদারকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড, ৩৪৮ কোটি তিন লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থপাচারের দায়ে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৬৯৬ কোটি সাত লাখ ৩৮ হাজার ১৮৬ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। মোট ১ হাজার ৪৪ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার, ভাই প্রিতিশ কুমার হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা, অবন্তিকা বড়াল ও শংখ বেপারী অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে সর্বনিম্ন সাজা তিন বছর করে কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন।
অর্থপাচারের দায়ের প্রত্যেককে সর্বনিম্ন সাজা চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রত্যেককে বিভিন্ন অংকের টাকা অর্থদণ্ড করেছেন।
রায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিদের মধ্যে লিলাবতী হালদারকে ৫৪ কোটি ২০ লাখ ১৬ হাজার ৩২৪ টাকা, অবন্তিকা বড়ালকে ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪২৩ টাকা, শংখ বেপারীকে ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ৯১৪ টাকা,
সুকুমার মৃধাকে ১৬ কোটি টাকা, তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে ১০ লাখ টাকা, পূর্ণিমা রানীকে সাত কোটি ১৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা, উত্তম কুমারকে ৮৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা, অমিতাভ অধিকারীকে ৬৯ কোটি সাত লাখ ১৩ হাজার ৬১৩ টাকা, প্রিতিশ কুমারকে এক কোটি দুই লাখ ২৯ হাজার ৯৭৯ টাকা, রাজিব শর্মাকে ৫৪ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ৭৩০ টাকা, সুব্রত দাসকে দুই কোটি ৪৯ লাখ ২৬ হাজার, অনঙ্গ মোহনকে ১৩৯ কোটি ২৭ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩০ টাকা এবং স্বপন কুমারকে ১৪ কোটি তিন হাজার ১৬১ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
এছাড়া চারটি ফ্ল্যাট, ৬ হাজার ৪১৯ দশমিক শূন্য ৫৫ ডিসিমিল জমি, ১১টি যানবাহন, বিভিন্ন ব্যাংকের ৪১ হিসাবের এক কোটি ৮৭ লাখ ৪৭ হাজার ৮৮১ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার ১৪ আসামির মধ্যে সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা, অবন্তিকা বড়াল ও শংখ বেপারী কারাগারে আছেন। এদিন রায়ের আগে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পি কে হালদারসহ ১০ জন পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ৪ অক্টোবর দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ৪২৫ কোটি ৯৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
সারাবাংলা/এআই/এনএস