‘শত্রু বাইরে থেকে আসা লাগে না, দেশের ভেতরেই আছে’
৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:২৬
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের শত্রু বাইরে থেকে আসা লাগে না, আমার দেশের ভিতরেই আছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী বা পঁচাত্তরের খুনি বা তাদের আওলাদ-বুনিয়াদ যারা আছে; এরা কখনও বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেবে না। বাধা দেবে। কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করে তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা এগিয়ে যাব। কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।’
রোববার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাদের ৭৫তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন ৫টি প্রকল্প/কর্মসূচির আওতায় নির্মিত ভবন ও জেমস (GEMS) সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
মানুষের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির লক্ষ্যে সরকার যে কাজগুলি করে যাচ্ছে তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে নেই। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। অনেক রাষ্ট্রপ্রধান-সরকারপ্রধান, আমি তো এখন সব থেকে পুরনো, যাদের সঙ্গে দেখা হয় অনেকে নবীন আছে। আমাকে জিজ্ঞাসা করে আপনার ম্যাজিকটা কি? ছোট ভূখণ্ডের দেশ। ১৭ কোটি মানুষ, তো এদের খাবার এদের চিকিৎসা এদের জন্য এতো কিছু কিভাবে করি?’
‘আমার মাটি আছে। আমার মানুষ আছে। এই মাটি মানুষ দিয়েই বাংলাদেশ গড়ব’, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেটাই বিশ্বাস করি। যে কারণে আমরা ২০৪১ এর প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে দিয়েছি। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক অভিঘাতের কথা শুনি। সিভিএফ কান্ট্রির প্রেসিডেন্ট হিসাবেও কাজ করেছি। আমাদের অভিজ্ঞতা আমরা অন্যের সাথে শেয়ার করি।’
বদ্বীপকে জলবায়ু অভিঘাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা করে গ্রহণ করে কাজ করছে। সেদিকে নবীন কর্মকর্তাদের নজর দিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু কোন দূষণ করি না। নদী-নালা খাল বিল জলাধারগুলি যেন ঠিক থাকে। বিভিন্ন ঋতুতে যে পরিবর্তন হয় তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের প্রত্যেকটা পরিকল্পনা করতে হবে। যাতে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবার কথাটা মনে করিয়ে দিই। আর আমি বলি যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে করলে হবে। আমার দেশের মানুষগুলি হচ্ছে আমার বড় সম্পদ। সেটাই আশা করি শুধু নিজেরা না সাথে সাথে মানুষের ভিতরে ওই চেতনাটা জাগাতে হবে।’
অর্থনীতি কিছুটা চাপে আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি, এই ব্যাপারেও সবাইকে মাঠে গেলে একটু ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। যেখানে যতটুকু জমি আছে আবাদ করতে হবে। আমি আগে নিজে করি, তারপর সবাইকে বলি। নিজে না করে বলি না। গণভবন এখন একটা কৃষি খামার। কেউ চাইলে এসে দেখতে পারে। সেখানে ৫ প্রকারের ধানও লাগানো আছে।’
এসময় গণভবন থেকে শুরু করে গ্রামের জমিতে চাষাবাদ করারও প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিস) রেক্টর আশরাফ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ৭৫তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের চার জন প্রশিক্ষণার্থী অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
সারাবাংলা/এনআর/এমও