নিখোঁজের ১ মাস পর স্কুলশিক্ষকের গলিত মরদেহ উদ্ধার
১০ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৩২
যশোর: পাওনা ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পর স্কুলশিক্ষক (অব.) এস এম ময়মুর হোসেনের (৪৮) গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়মুর যশোরের রূপদিয়া মুন্সেফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে যশোর-মাগুরা সড়কের বালিয়াডাঙ্গা পাঁচবাড়িয়া এলাকার ছোট একটি ডোবায় মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা ময়মুরের লাশের সন্ধান পায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করে।
পরে ডিবির অনুসন্ধানে উঠে আসে অজ্ঞাতনামা মরদেহটি ময়মুরের। তিনি মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা আমিনপুর গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিন সরদারের ছেলে। যশোর শহরের বকচর প্রাইমারি স্কুলের পাশে ভাড়া থাকতেন ময়মুর।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) জুয়েল ইমরান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ময়নাতদন্তের মরদেহটি যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ময়মুরের স্ত্রী শিরিনা খাতুনের অভিযোগ, বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরায় হাসান আলী বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির কাছে পাওনা টাকা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন এস এম ময়মুর হোসেন। এ ঘটনায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করেন।
তিনি জানান, অভিযুক্ত হাসান আলী বিশ্বাস তাদের পূর্ব পরিচিত। ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার স্বামী ময়মুর হোসেনের কাছ থেকে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন হাসান। কিন্তু চাকরি দিতে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত চাওয়া হয়। চলতি বছরের ১০ মে ময়মুর হোসনকে রুপালী ব্যাংক খাজুরা শাখার একটি চেক দেন হাসান আলী বিশ্বাস।
তিনি আরও জানান, এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে হাসান আলী বিশ্বাস মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ময়মুর হোসেনকে পাওনা টাকা আনার জন্যে খাজুরা যেতে বলেন। পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে হাসান আলী বিশ্বাসের বাড়িতে যান ময়মুর। সেখানে যাওয়ার পর ময়মুর হোসেন তার আরেকটি মোবাইল ফোন থেকে শিরিনাকে কল দিয়ে খাজুরায় পৌঁছার খবর নিশ্চিত করেন। সর্বশেষ ওই তারিখে রাত ৯টা ৪৯ মিনিটে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় শিরিনা খাতুনের। এরপর থেকে ময়মুর হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনায় প্রথমে তিনি কোতয়ালি থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দেন। নিহতের স্বজনের দাবি, পূর্বপরিকল্পিতভাবে এস এম ময়মুর হোসেনের ডেকে নিয়ে তাকে গুম ও পরে খুন করা হয়।
কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, মরদেহটি ৪/৫ দিন আগে এখানে ফেলে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহে পচন ধরেছে ও দুর্গন্ধ হওয়ায় মানুষ টের পেয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, ‘হত্যা করা হয়েছে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসান আলীকে অভিযুক্ত করা হচ্ছিল। আগেই তাকে পুলিশ ও পিবিআই বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু তার কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া নিহতের শরীরে আঘাতেরও কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ফলে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
সারাবাংলা/পিটিএম