সকালে কারাদণ্ড, দুপুরে জামিন, বিকেলে সাজা স্থগিত

ঢাকা: আদালত অবমাননার দায়ে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে দেওয়া এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এ সাজা স্থগিত থাকবে।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে মো. সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

এর আগে, এদিন সকালে কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানাকে আদালত অবমাননার দায়ে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে সাত দিনের মধ্যে সোহেল রানাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।

তবে হাইকোর্ট ৩০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়ার তিন ঘণ্টা পর আপিল দায়েরের শর্তে বিচারক সোহেল রানাকে ৩০ দিনের জন্য জামিন দেন। এর পর বিকেলে সেই সাজা স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত।

আরও পড়ুন:

• কারাদণ্ডাদেশের ৩ ঘণ্টা পর জামিন পেলেন সেই বিচারক
• আদালত অবমাননার দায়ে বিচারকের কারাদণ্ড

এর আগে, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারক সোহেল রানাকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি তাকে সাত দিনের মধ্যে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতে সোহেল রানার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আর আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রণয় কান্তি রায়। এরপর দুপুরে আপিল দায়েরের শর্তে ৩০ দিনের জন্য জামিন পান মো. সোহেল রানা। তারপর বিকেলে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালত সাজা আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন।

জানা যায়, একটি ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ৫৬১ (এ) ধারার ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। পরবর্তী সময়ে সেই আদেশের কপি কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার কাছে যায়। তিনি হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বিচারকাজ চালিয়ে যান। পরে হাইকোর্টের আদেশ অমান্যর বিষয়ে ব্যাখ্যা চান আদালত।

এর পর হাইকোর্টের আদেশ অমান্যর বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করেন সোহেল রানা। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে সোহেল রানার প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে সোহেল রানা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। হাইকোর্ট তার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন গ্রহণ না করে তাকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সেইসঙ্গে তাকে সাত দিনের মধ্যে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) সোহেল রানা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

আদালত জামিন বিচারক রায় সাজা স্থগিত