Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যেভাবেই হোক, দেশে নির্বাচন হবেই: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৫৫

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যেভাবেই হোক, আগামীতে এ দেশে নির্বাচন হবেই এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। ভোট দিলে আছি, ভোট না দিলে নাই। বিএনপি বিদেশে এখানে-সেখানে ধর্ণা দেয়, ওইসব ধর্ণা কোনো কাজে লাগবে না। জনগণের শক্তি বড় শক্তি আর জনগণের শক্তিতেই আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে।’

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাওলায় সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী দিনেই এই জনসভা হওয়ার কথা ছিল। তবে বৈরি আবহাওয়া বিবেচনায় জনসভা এক সপ্তাহ পেছানো হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে করেনা অতিমারি, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশনের কারণে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও দেশকে আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না থাকে অন্য কেউ যদি আসে সব ধ্বংস করে দেবে। এদেশের মানুষ কি সেই ধ্বংস চায়? ওই বিএনপির কথায় নাচতে চায়? ওই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী তাদের কথা শুনতে চায়?’

আগামী নির্বাচনে ফের নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ বদলে গেছে। আজকের ঢাকা বদলে গেছে। মেট্রোরেলের সাথে পাতাল রেলও যাতে হয়, সেই প্রকল্পের কাজ চালু করা হয়েছে।’ এছাড়া ভবিষ্যতে পুরো ঢাকা ঘিরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

পদ্মাসেতু নির্মাণ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক, দুর্নীতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে দুর্নীতি করতে আসেনি। মানুষের সেবা করতে ক্ষমতায় এসেছি। তাই চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম বের করো তোমাদের ডকুমেন্ট, এটায় তোমরা দুর্নীতি পেয়েছো কিনা? খালেদা জিয়ার আমলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড, সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট, নাইকো, গ্যাটকো সবকিছুতেই তারা দুর্নীতি করেছে। বিদ্যুতে বিশ্বব্যাংক টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। সড়কে বিশ্বব্যাংক টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। ওদের ওই মেরুদণ্ড ছিল না যে তারা চ্যালেঞ্জ করে। কারণ তারা তো দুর্নীতিবাজই ছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে। জনগণের কল্যাণে কাজ করে। তাই আমরা চ্যালেঞ্জ করি। কানাডা আদালত রায় দেয় বিশ্বব্যাংকের সকল অভিযোগ ভুয়া-মিথ্যা। আমি বলেছিলাম নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করবো, অনেকে বিশ্বাস করতে পারে নাই। আমরা করতে পারি। কিন্তু আমার বিশ্বাস, আমার আস্থা, আমার জনগণ। আমি তাদের উপর বিশ্বাস আস্থা রেখেই নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নিরর্মাণ করে দিয়েছি। এখন পদ্মা নদীর উপর দিয়ে গাড়ি রেল দুটোই যাচ্ছে। সেটাও আমরা করতে পেরেছি। যা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।’

কর্নফুলি টানেল, গভীর সমুদ্র বন্দর, উড়ালসড়কসহ সারাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের নানা চিত্র তুলেও ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

২০০৮ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে সরকারের থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সভাপতি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা হচ্ছে একটি মার্কা; যে মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে। যে মার্কা উন্নয়ন দিয়েছে। যে মার্কা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। যে মার্কা পানির সমস্যা সমাধান করেছে। যোগাযোগ সহজ করেছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। কয়েক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। একমাত্র নৌকা মার্কা; এই মার্কা ক্ষমতায় থাকলেই সব হবে। আর ওই লুটেরা দুর্নীতিবাজ খুনি-ডাকাত-চোর, এরা ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস করে দেবে।’

দেশকে এগিয়ে নেওয়া সেটা একমাত্র নৌকা মার্কাই পারে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাই আপনাদের কাছে আমার এটাই আবেদন থাকবে আগামী নির্বাচন; আমি জানি বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না? তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। খুব স্বাভাবিক তারা যে নির্বাচন করবে তাদের নেতাটা কে? তারা যে নির্বাচন করবে তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবে? ওই দুর্নীতিবাজ পলাতক আসামি? না এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী? সে নাকি যায় যায়, আর একটা পলাতক। তাহলে কে করবে? এজন্য তাদের একটা চেষ্টা নির্বাচন বানচাল করার।’

প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই; আপনারা কি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। শুধু নিজে দিলে হবে না পরিবার বন্ধু-বান্ধব দেশ-বিদেশে সবার কাছে প্রচার করতে হবে। ১৫ আগস্ট বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি। আজ বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। বাংলাদেশের জনগণই আমার আপনজন। কাজেই তাদের জন্য কাজ করা, আমি আমার দায়িত্ব-কর্তব্য হিসাবেই নিয়েছি।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন।

আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আ ফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর