ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীর মাইগ্রেশন স্থগিত
১৬ অক্টোবর ২০২৩ ০০:২৯
ঢাকা: ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মাইনুল এহসানকে (মাহির) কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন/বদলির আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (১৫ অক্টোবর) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খাইরুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাসমিয়া প্রধান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদেশের পর আইনজীবী তাসমিয়া প্রধান সারাবাংলাকে বলেন, মাইনুল এহসানকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে বেআইনিভাবে মাইগ্রেশন/বদলি করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ছাড়পত্র পাঠানো হয়। পরে গত ২ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. মুজতাহিদ মুহাম্মদ হোসেনের সই করা অফিস আদেশে তাকে মাইগ্রেশন/বদলি করা হয়।
কিন্তু বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইনে বলা আছে, সরকারি মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ বা ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির জন্য নির্ধারিত তারিখ শেষে শূন্য আসনের বিপরীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন আবেদন, মেধাস্থান ও মাইগ্রেশন আবেদনে উল্লিখিত কলেজ পছন্দ অনুযায়ী সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরপর সর্বোচ্চ চারবার কলেজ পরিবর্তনের (অটো মাইগ্রেশন) সুযোগ পাবে। চতুর্থ মাইগ্রেশন ক্লাস শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রতিটি মাইগ্রেশন শেষে পাওয়া শূন্য আসন যে কোটা থেকে আসন খালি হবে, সেই কোটার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুযায়ী পূরণ করা হবে।
আইনে আরও বলা হয়েছে, অটো মাইগ্রেশন শেষ করে চূড়ান্তভাবে ভর্তি শেষ হওয়ার পর অনুচ্ছেদ ৬(১)-এ বর্ণিত নিয়ম ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশিপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই তার ভর্তি হওয়া সরকারি বা বেসরকারি মেডিকেল, ডেন্টাল কলেজ বা ডেন্টাল ইউনিটে থেকে অন্য কোথাও বদলি হওয়া বা করা যাবে না।
তাসমিয়া প্রধান বলেন, মাইনুল এহসানকে মাইগ্রেশন দেওয়ার আগে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ কিংবা কোনো ধরনের চিঠি দেওয়া হয়নি। এ কারণে সংক্ষুব্ধ হয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওই মাইগ্রেশন/বদলির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গত ১১ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন মাহির। আজ (রোববার) আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে মাহিরের মাইগ্রেশন/বদলির আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।
এই আইনজীবী জানান, মাহিরের বদলির আদেশ কেন বেআইনি ও আইনি কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (শিক্ষা চিকিৎসা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ আটজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন মাইনুল এহসান (মাহির)। গত ১৩ এপ্রিল এক শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং করার অভিযোগে ওঠে তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে জানান। এরপর এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ দেখা হয়। পরে ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সইয়ে মাহিরকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মাহিরকে মাইগ্রেশন দিয়ে কিশোরগঞ্জ মেডিকেল কলেজে পাঠাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ছাড়পত্র পাঠান। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাহিরকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশন দিয়ে আদেশ জারি করে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর
ফরিদপুর মেডিকেল বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মাইগ্রেশন স্থগিত মাইনুল এহসান (মাহির)