Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুদ্ধের নামে অস্ত্রের খেলা বন্ধ করেন— বিশ্ব নেতাদের শেখ হাসিনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:০৯

ঢাকা: বিশ্ব নেতাদের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি শুধু নারী রাজনীতিক নেতা হিসাবে না বা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে না; একজন মা হিসাবে, একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে বিশ্ব নেতাদের কাছে অনুরোধ করবো, আপনারা বন্ধ করেন এই যুদ্ধ। বন্ধ করেন এই অস্ত্রের খেলা। যুদ্ধ হলে সবচেয়ে কষ্ট পায় নারী ও শিশুরা।’

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে গণভবনে নারী উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা অঙ্গসংগঠনের নেতাদেরর সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, সকাল ১০টায় ধানমণ্ডির জয়িতা টাওয়ারের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন, জয়িতা টাওয়ারে স্থাপিত জামদানি গ্যালারি ও জয়িতা মার্কেট প্লেস উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞাপন

জয়িতা টাওয়ারের উদ্বোধন শেষে গণভবনের খোলা মাঠে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত নারী সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সারা পৃথিবী জুড়ে এক যুদ্ধের দামামা আমরা দেখতে পাই। কিছুদিন আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এখন আবার প্যালেস্টাইনের উপর হামলা করেছে ইসরাইল। প্যালেস্টাইনের তো অর্ধেকের বেশি জায়গা তারা দখলই করে ফেলেছে।’

‘এই যুদ্ধ আমরা চাই না। বন্ধ করেন এই অস্ত্রের খেলা। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ হলে সবচেয়ে কষ্ট পায় আমাদের মেয়েরা এবং শিশুরা। নারীরা এবং শিশুরাই সব থেকে কষ্ট পায়” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন নিজের বন্দি থাকার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তো সব অভিজ্ঞতা আছে। একাত্তর সালে আমার বাবাকে বন্দি করে নিয়ে যায়। এরপর আমার মাকে বন্দি করে। আমি ছোটবোন রেহানা আমার ছোট ভাইসহ আমরা বন্দিখানায় ছিলাম। আমাদের খাবার কি হবে তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। আমি অন্তঃস্বত্তা ছিলাম। আমার প্রথম সন্তান সেই বন্দিখানায় জন্মগ্রহণ করে। কাজেই যুদ্ধের সময় যে কি ভয়াবহ, সেই অভিজ্ঞতা আমার আছে।’

বিজ্ঞাপন

‘আবার পঁচাত্তরে বাবা-মা ভাই সব হারালাম, বিদেশের মাটিতে দুই বোন; আমাদের তো কিছুই নেই। পয়সা নেই, থাকার জায়গা নেই, জানি না কোথায় যাব? তারপর ভারতে ইন্দিরা গান্ধী আমাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। আমরা রিফিউজি হিসাবে ছয় বছর কাটিয়েছি। দেশে আসতে দেয়নি’, বলেও স্মৃতিচারণ করেন তিনি।

সংবিধান লংঘন করে জিয়াউর রহমানের নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতা দখল করার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তাদের যে বন্দুকের নল দিয়ে ক্ষমতা দখল এবং তাদের যে সন্ত্রাসী চেহারা আজ তো সারাদেশ দেখেছে। কিভাবে নারীদের উপর, মেয়েদের উপর অত্যাচার, কিভাবে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে? তারাই আমাদের দেশে আসতে দেয়নি।’

‘আওয়ামী লীগ আমার অবর্তমানে সভাপতি নির্বাচিত করেছিল। ফিরে এসেছি একটা চিন্তা নিয়ে যে, এই বাংলাদেশকে আমার বাবা যেভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, সেভাবে গড়বো। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়েছে। ককর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। কাজেই আমাদের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। আমার বোনদের কাছে সেটাই আমার আহ্বান।’

নারী উদ্যোক্তাসহ নারী নেতাদের গণভবনে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকদিন থেকে অনেকে বলছিলেন, ভাবলাম একবার আমরা দাওয়াত দেই। কারণ সময় খুব কম, প্রতিদিন খাটতে হয়। তবু আপনারা কষ্ট করে এসেছেন। আমি মনে করি ধন্য গণভবনের মাটি আমার বোনদের পদাপর্ণে।’

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।

অনুষ্ঠানে ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

অস্ত্রের খেলা যুদ্ধ শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর